এত এত সাফল্যের পরও ৯ ঘণ্টার ব্ল্যাকআউট আর দিনে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং যেন অচেনা এক অধ্যায় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের জন্য। গত ১২ বছরে এই খাতে কেবল উৎপাদনের জন্যই বিনিয়োগ হয়েছে অন্তত ২৭ বিলিয়ন ডলার। যার বদৌলতে হয়ত আলো জ্বলেছে পুরো দেশে। কিন্তু তার নিচে অন্ধকারও যে বাড়ছে দিন দিন।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির হিসাবে, ১৩ অক্টোবর দেশে চাহিদা মোট ১৩ হাজার মেগাওয়াট দেখানোর পরও লোডশেডিং ছিল সোয়া ১২০০-র ওপরে। আর ৮ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তা ছাড়িয়ে যায় ২ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। অন্যদিকে সর্বোচ্চ উৎপাদন সীমাবদ্ধ ছিল সাড়ে ১২ হাজারে। অথচ একই ব্যবস্থা দিয়ে করা সম্ভব হয়েছিল পৌনে ১৫ হাজার। ফলে দ্বিগুণের বেশি ক্ষমতা স্থাপন করার যৌক্তিকতা মানতে পারছে না কোনো মহলই।
বর্তমানে ১৫০টির বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকলেও অলস, রক্ষণাবেক্ষণ আর জ্বালানির অভাবে উৎপাদনে নেই প্রায় এক-তৃতীয়াংশে। অন্যদিকে গ্যাস দিয়ে উৎপাদনের ব্যবস্থা আছে ১০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে। কিন্তু সেখান থেকেও পাওয়া যাচ্ছে না অর্ধেকের বেশি। বিপরীতে তেলের কেন্দ্র চালাতেও ব্যয় বাড়ছে আগের চেয়ে কয়েক গুণ। ফলে বাধ্য হয়েই চাহিদা কমিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হচ্ছে সরকারকে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, প্রত্যাশা যা ছিল তার চেয়ে সব ধরনের জ্বালানির মূল্যই বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস ক্রয়ের কারণে তা-ও কিছুটা রক্ষা। আগে তেল ও গ্যাসের বা কয়লার দামে অনেক পার্থক্য ছিল, কিন্তু এখন সেটা কমে এসেছে। কিন্তু আমাদের তো শুধু এই মুহূর্তের চিন্তা করলে হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ তো আর কোনো বিচ্ছিন্ন দেশ না, বর্তমানে সব দেশের একই সমস্যা।
বলা হচ্ছিল, অক্টোবরে রামপালের প্রথম ইউনিট আর পায়রা থেকে বাড়তি বিদ্যুৎ যোগ হলে কমবে সংকট। কিন্তু উল্টো গ্যাসের যোগান কমে যাওয়ায়, বেড়ে গেছে সমস্যা। যে অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার আভাস নেই শিগগিরই।