মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘাত দেশটির অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। চাল, রান্নার তেলসহ দাম বেড়েছে প্রায় সব নিত্যপণ্যের। দেখা দিয়েছে অনেক পণ্যের সংকট।
তিন বছর আগেও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমারে এক বস্তা উচ্চ মানসম্পন্ন চালের দাম ছিল ১৬ ডলার ৫০ সেন্ট। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সেই দাম পৌঁছেছে বস্তাপ্রতি ৪৪ ডলার ২০ সেন্টে। নিম্নমানের চালের দর ছিল ৮ ডলার ৪০ সেন্ট, এখন সেই দাম পৌঁছেছে ২৭ ডলারে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে প্রতিনিয়ত বেড়েছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা।
সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছরে নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে ভোজ্যতেলের দামও। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেড় কেজি ভোজ্যতেলের দর ছিল ১ ডলার ২০ সেন্ট। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একই পণ্য কিনতে হচ্ছে ২ ডলার ১০ সেন্ট দিয়ে। আর্থিক সংকট আর সীমান্তে সংঘাতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ায় এখন লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হয় ক্রেতাদের।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি তিন বছর ধরে জ্বালানি সংকটও মোকাবিলা করতে হচ্ছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষকে। দেশটিতে গ্যাসোলিন-অকটেনের দাম বেড়েছে ৫শ’ ২০ শতাংশ। আগে ২০ সেন্টে ১ লিটার গ্যাসোলিন-অকটেন মিললেও এখন খরচ হচ্ছে ১ ডলার ২৫ সেন্ট।
একইভাবে দেশের মুদ্রা কিয়াটের অবমূল্যায়নে দেশটিতে রেকর্ড বেড়েছে বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম স্বর্ণের দাম। ৩ বছরে স্বর্ণের দর বেড়েছে ১শ’ ৯০ শতাংশ। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় মুদ্রা কিয়াটের অবমূল্যায়ন হয়েছে ১শ’ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। সেসময় ১ ডলারে ১ হাজার ৩শ’ ৩০ কিয়াট মিললেও এখন মিলছে সাড়ে ৩ হাজার কিয়াট।
জান্তা সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতা নেয়ায় কমেছে বাণিজ্য আর বিদেশি বিনিয়োগ। ৩ বছরের ব্যবধানে দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১শ’ ৯০ শতাংশ। মিয়ানমারের জিডিপি প্রবৃদ্ধিও কোনভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে না। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ শতাংশ. ২০১৯-২০ অর্থবছরে যা ছিলো ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ।