বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: নতুন নির্বাচন কমিশন একটি আইনের মাধ্যমেই হবে, নাকি আগের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমে হবে, সেটি পরিষ্কার করল আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচন কমিশনের আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী করা, কমিশন গঠনে আইন করা এবং সব ধরনের নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা।
সোমবার বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল এ বিষয়টি স্পষ্ট করেন।
পরে এ বিষয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ মেনে ইসি গঠনে একটি আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সরকার এ–সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া উত্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাংবিধানিক ক্ষমতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে রাষ্ট্রপতি ইসি গঠনে যে ব্যবস্থা নেবেন, তাতে আওয়ামী লীগের সমর্থন থাকবে।
তিনি বলেন, এর আগেও দুইবার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এতে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ ছিল। সে বিষয়ও তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেছেন।
এ সময় সাংবাদিকেরা ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন, আইনের মাধ্যমে না সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে? এর উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আইন পাসের বিষয়ে ম্যাজিক তাস নেই। যে প্রক্রিয়ায় আইন প্রণয়ন হয়, সেভাবেই হবে।’
অল্প সময়ে আইন প্রণয়ন করা সম্ভব কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়, অপেক্ষা করুন।’
এর আগে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে প্রতিনিধি দল নিয়ে বঙ্গভবনে পৌঁছান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫টা ১০ মিনিটে বৈঠক শেষে বের হন তারা।
আওয়ামী লীগের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে- সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের কোনো আইন না থাকায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান ব্যতিরেকে অন্য কোনো আইন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে সাংবিধানিক চেতনা সমুন্নত রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণের লক্ষ্যেই মূলত এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সব নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।