আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর। মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শীর্ষ মুরব্বি, কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।
সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই মোনাজাত চলে প্রায় ২৩ মিনিট। দেশবিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এতে অংশ নেন। রবের কাছে বান্দার ফরিয়াদ। দু’হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে আশ্রয় আর ক্ষমাপ্রার্থনা। লাখো মানুষের আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখর তুরাগ তীর। চোখের জলে মুসল্লিরা তাদের মনের সব আকুতি জানিয়েছেন স্রষ্টার কাছে।
ফজরের নামাজের আগেই ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। যে যেখানে ছিলেন, সেখান থেকেই দু’হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। বিশ্ব মানবতার কল্যাণ, শান্তি, মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন দূরদূরান্ত থেকে আসা সব বয়সী মুসল্লিরা।
মোনাজাতের সময় পুরো টঙ্গী এলাকা ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। তারা সবাই ইহলোকের মঙ্গল ও পরলোকের ক্ষমা প্রার্থনা করে সুখ ও সমৃদ্ধি চেয়েছেন।
রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। হেদায়েতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর কিছু সময়, নসিহতমূলক কথা বলেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি এসেছেন ইজতেমা ময়দানে। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা এখানে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগি করেছেন।
ইজতেমার এই পর্বে ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৭২টি দেশ থেকে ৮ হাজারের বেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।
ইজতেমায় আগত আরও ৬ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। শীতে অসুস্থ হয়ে ও বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁরা মারা যান। ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ইজতেমা ময়দানের মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ করতে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা থেকে গাজীপুরের তিনটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আজ দুপুর ২টার পর সড়কগুলো আবার খুলে দেওয়া হবে।
সড়ক তিনটি হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড পর্যন্ত এবং রাজধানী ঢাকার কামারপাড়া মোড় থেকে টঙ্গীর মন্নুগেট সড়ক।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব সড়কে ইজতেমার মুসল্লি বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনীয় গাড়ি যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, গণমাধ্যমকর্মী বা বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
চার দিন বিরতির পর ৯ ফেব্রুয়ারি ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।