ইন্দোনেশিয়ায় কিডনি বিকল হয়ে মৃত শিশুর সংখ্যা বেড়ে ১৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ২২ প্রদেশে এখন পর্যন্ত ২৪১টি শিশুর কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুনাদি সাদিকিন।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, সিরাপ জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রীয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে। ফলে ইন্দোনেশিয়াতে আপাতত সবধরনের সিরাপজাতীয় চিকিৎসা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বাজারে প্রচলিত সিরাপে ইথিলিন গ্লাইকল ও ডায়েথিলিন গ্লাইকল পাওয়া যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি পাঁচটি সিরাপে ইথিলিন গ্লাইকল থাকায় উৎপাদকদের তা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে ফেলতে বলেছে সেদেশের খাদ্য ও ওষুধ এজেন্সি।
শুক্রবার (২১শ অক্টোবর) রাজধানী জাকার্তায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাদিকিন বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশের ২২ প্রদেশে গুরুতর কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪১ জন এবং মধ্যে ১৩৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত এই শিশুদের অধিকাংশেরই বয়সসীমা ৫ বছরেরও কম।’
তিনি আরও বলা হয়, দেশের ১০২ টি সিরাপে একই ধরনের উপাদান পাওয়া যাওয়ায় সেগুলোকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে।
সাধারণত শিল্প ও কলকারখানায় এই দু’টি রাসায়নিক উপদান ব্যবহার করা হয়। দামে সস্তা হওয়ায় অনেক ওষুধ কোম্পানি সিরাপ তৈরিতে খাবার উপযোগী গ্লিসারিনের পরিবর্তে স্বল্পমাত্রায় ইথিলিন গ্লাইকোল ও ডায়াথিলিন গ্লাইকোল ব্যবহার করে। মানবদেহে এর তেমন গুরুতর কোনো প্রভাব না পড়লেও মাত্রা অতিক্রম করলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা থাকে।
সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়াতেও কিডনি বিকল হয়ে ৭০ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি মেইডেন ফার্মাসিটিক্যালসের তৈরি চারটি সর্দিকাশির সিরাপ এসব মৃত্যুর জন্য দায়ী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ’এই চারটি কফ সিরাপে এথিলিন গ্লাইকল ও ডায়াথিলিন গ্লাইকল নামের দুটি রাসায়নিক উপাদানের বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।’