গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে দখলদার বাহিনীর এই বর্বরতা প্রায় চার মাসে পৌঁছেছে। সেই সাথে গাজায় হামলার ১১৮তম দিনেও গাজার বিভিন্ন প্রান্ত কেঁপে উঠছে ইসরাইলের বোমা ও গোলার আঘাতে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা, আনাদলু, এএফপি, রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে ২৭ হাজার ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৬৬ হাজার ১৩৯ ফিলিস্তিনি। ইসরাইলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া সংঘাতে ইসরাইলের নিহত হয়েছেন এক হাজার ১৩৯ জন।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছেন, গাজা নগরীর পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলা ছুড়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে এ অঞ্চলের রেমাল ও তাল আল-হাওয়া এলাকায়। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। উপত্যকার দক্ষিণে জায়তুন এলাকায় ইসরাইলের যুদ্ধবিমানের বোমার আঘাতেও কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।
গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলের বোমা হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আবাসিক ভবনগুলোয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আগুন দিচ্ছেন ইসরাইলি সেনারা।
এদিকে ইসরাইলের এই অব্যাহত হামলা ও নৃশংসতার মুখে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন গাজার ১৯ লাখ বাসিন্দা। তাদের বেশির ভাগই গাজার দক্ষিণে রাফা সীমান্ত এলাকায় নানা আশ্রয়শিবিরে চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
গাজায় শান্তির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘অনেক দেরি হওয়ার আগেই এ অঞ্চলকে আরও সহিংসতায় জড়িয়ে পড়া থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।’ জাতিসংঘ মহাসচিবের এমন আহ্বানের পর পশ্চিম তীরে ইসরাইলি অভিযান ও ধরপাকড়ের ঘটনা ঘটেছে।
গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় জোর তৎপরতা চলছে। এছাড়াও যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মধ্যস্থতাকারীরা প্যারিসে আলোচনার পর ইসরাইলের সঙ্গে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে হামাস।