আজ ঈদুল ফিতর। গত দু’বছরে লকডাউন, শাটডাউন আর মুভমেন্ট পাশসহ নানা বাধা-ধরা নিয়মের মধ্যে দিয়ে কেটেছে পরপর চারটি ঈদ। তাই এবারের ঈদ আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে নতুন আনন্দ, নতুন বার্তা, নতুন আলো।
গত দু’বছরে করোনার কারণে আমরা অনেকেই স্বজন-প্রিয়জন হারিয়েছি। অর্থকষ্ট, দারিদ্র্যতাসহ নানা বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়ে গিয়েছি। করোনার কারণে পরপর চারটি ঈদ স্বজনদের সাথে কাটানোও হয়ে ওঠেনি। সবকিছুকে ছাপিয়ে আবারও বছর ঘুরে এসেছে ঈদ। তাই পেছনের সব গ্লানি ভুলে নতুন করে শুরু হোক আজ থেকেই।
মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিমদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনেক সংবাদপত্র ও অনলাইন বিশেষ সংখ্যা বের করেছে। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে।
উৎসাহ, আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের আশায় মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর এই আনন্দ আয়োজনে শামিল হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হয়নি।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবের রঙ গত দুই বছর হারিয়েছিল করোনাভাইরাস মহামারীর খাঁড়ায়। জাতীয় ঈদগাহে জামাতও হয়নি গত দুই বছরে চারটি ঈদে। মসজিদে ঈদ জামাত হলেও বিধি-নিষেধের বেড়াজালে কোলাকুলির মতো চেনা দৃশ্যও স্বাস্থ্যবিধির তোড়ে গিয়েছিল হারিয়ে।
এবার এখানে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। সকাল ৭টা থেকে ঈদের জামাত শুরু হয়েছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। একেক ঘণ্টার ব্যবধানে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত সেখানে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ খচিত ব্যানার মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শন করা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে আগের রাতে সরকারি ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়।
ঈদ উদ্যাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, প্রবীণনিবাস, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, সেফহোমস, ভবঘুরে কল্যাণকেন্দ্র, দুস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে জামাত হচ্ছে রাজধানীর পুরান ঢাকার ছাপড়া মসজিদ, লালবাগ শাহী মসজিদ, আজিমপুর কবরস্থান মসজিদ, জাতীয় সংসদের দক্ষিণপ্লাজা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে রাজধানীতে মোট ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে, জানিয়েছে প্রশাসন।