বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঘাত হেনে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। আজ (রোববার, ২৬ মে) সন্ধ্যা থেকে পটুয়াখালী, বরিশাল ও সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকায় রিমালের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে তাণ্ডবে পরিণত হয় ঘূণিঝড়টি। যার প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়। উপকূল ‘অতিক্রম করে স্থলভাগে উঠে আসতে সময় লাগবে ৫-৬ ঘণ্টা। উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে উপকূলে আঘাত হানে রিমাল। এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র উপকূল হয়ে ভূমিতে প্রবেশ করবে।
এরপর ৫ থেকে ৭ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ পুরো উপকূল পেরিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মধ্যরাতের মধ্যেই পুরো ঝড়টি উপকূল পেরিয়ে যেতে পারে।
সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রবেশের পর দুই জেলায় ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঝড়ের মধ্যে নাপিতখালি আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। আর পটুয়াখালীর কলাপাড়ার অনন্তপাড়া গ্রামে স্বজনদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পানির স্রোতের ভেসে মো. শরিফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুকের মৃত্যু হয়।
রিমালের প্রভাবে সন্ধ্যা থেকেই উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও কুষ্টিয়া, রাজশাহী, হবিগঞ্জ, বগুড়াসহ বেশ কিছু জেলায় সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত চলছে। ঝড়ের কবলে পড়ে বরিশাল-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামিম হাসান ভূইয়া বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৭ ঘণ্টা তাণ্ডব চালানোর পর দেশের অভ্যন্তরে ঢুকবে রিমাল। তখন সারাদেশেই বৃষ্টি হবে। মূলত ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত থাকবে আগামীকাল সারাদিন।’
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝালকাঁঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়েছে। যা বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সন্ধ্যার পর থেকে জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য নদীর পানি ও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রোববার সকাল থেকেই পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং দ্বীপ ও চরগুলোতেও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।