চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ১১ মাসের মধ্যে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সদ্যসমাপ্ত এপ্রিল মাসে ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময়হার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা) হিসাবে টাকায় এই অর্থের পরিমাণ ১৭ হাজার ৩৭২ কোটি ১২ লাখ টাকা। গত বছরের মে মাসে ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মার্চ মাসে এসেছিল ১৮৬ কোটি ডলার।
সবশেষ এপ্রিল মাসে এসেছে ২০০ কোটি ৯৫ লাখ ডলার; যা গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রায় সমান। ২০২১ সালের এপ্রিলে এসেছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।
তার আগের দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় ওই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছিল বলে জানায় ব্যাংকগুলো। তবে মার্চ মাসে এই সূচকে ফের গতি ফিরে; ওই মাসে ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সামনে কোরবানির ঈদ আছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হওয়ায় ওই দেশগুলো থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসবে। আগামী দিনগুলোয় রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।’
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর রেমিট্যান্স প্রবাহেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ওই বছরের এপ্রিলে মাত্র ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এর পর থেকে অবশ্য মহামারির মধ্যেও ২০২০-২০২১ অর্থবছরের পুরোটা সময়ে (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। কিন্তু চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটার টান দেখা যায়। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবরে আসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বরে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।