ঘরের মাঠে নঁতেকে উড়িয়ে দিয়ে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানডে টানা দুই জয় তুলে নিয়েছে পিএসজি। এদিন পিএসজির হয়ে রেকর্ড গড়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। গোল পেয়েছেন লিওনেল মেসিও।
শনিবার (৪ মার্চ) পার্ক দ্য প্রাসে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নঁতের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জয় তুলে নেয় পিএসজি। দলের হয়ে গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, লিওনেল মেসি, দানিলো পেরেইরা। একটি গোল এসেছে আত্মঘাতি থেকে। নঁতের হয়ে গোল দুটি করেছেন লুদোভিক ব্লাস ও ইগনাতিয়াস গানাগো।
ঘরের মাঠে ম্যাচের ১২ মিনিটের সময় পিএসজিকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। ফাবিয়ান রুইসকে বল দিয়ে ডি বক্সে ছুটে যান মেসি। এই ফাঁকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার খুঁজে নেন নুনো মেন্দেসকে। তার কাট ব্যাকে নঁতের একজনের পায়ে লাগলে একটুর জন্য নাগালে পাননি এমবাপ্পে, তবে পেছন থেকে ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে বল জালে পাঠান মেসি। চলতি মৌসুমে এটি আর্জেন্টাইন মহাতারকার ত্রয়োদশ গোল।
এর পাঁচ মিনিট পর ১৭ মিনিটের সময় আত্মঘাতী গোলে লিড দ্বিগুণ হয় ফরাসি জায়ান্টদের। মেন্দেসের ক্রস পা বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন সফরকারী গোলরক্ষক। কিন্তু বিপদ কাটেনি দেখে গোলমুখে ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন হাজাম। পরে এই ডিফেন্ডারের বাম পা ছুঁয়ে বল চলে যায় জালে! ২-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
২ গোলে পিছিয়ে থেকে একের পর এক আক্রমণে নঁতের রক্ষণের উপর চাপ বাড়াতে থাকে পিএসজি। কিন্তু উল্টো ৩১তম মিনিটে গোল খেয়ে বসে স্বাগতিকরা। হাজামের কাছ থেকে বল পেয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে বুলেট গতির শটে পিএসজির পোস্ট খুঁজে নেন ফরাসি মিডফিল্ডার লুদোভিক ব্লাস। এর দুই মিনিট পর এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি। কিন্তু মেসির শট ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে সমতায় ফেরে নঁতে। কর্নারে জটলা থেকে জাল খুঁজে নেন ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড ইগনাতিয়াস গানাগো। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মেসির দারুণ কারিকুরিতে দলকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপ্পে। তবে একটু দুরূহ কোণ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। গোল সমতায় থেকে বিরতিতে যায় পিএসজি-নঁতে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। কিন্তু ৫২তম মিনিটে ডি বক্সে নর্দি মুকিয়েলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঠিক মতো শট নিতে না পারায়, এমবাপ্পেকে বলও বাড়াতে পারেননি। তবে ম্যাচের ৬০ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কর্নার থেকে বল পান এমবাপ্পে। ডি বক্সে বাইরে থেকে তার উঁচু করে বাড়ানো বলে দারুণ হেডে জাল খুঁজে নেন পেরেইরা।
ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে পেনাল্টি পায় পিএসজি। কিন্তু ভিএআরের কল্যাণে তা পাল্টে দেন ফ্রি কিক। সেটা থেকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি, ঝাঁপিয়ে পড়ে শেষ মুহূর্তে তার শট ঠেকিয়ে দেন নঁতে গোলরক্ষক।
ম্যাচের ৭৪তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে এমবাপ্পের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে যোগ করা সময়ে অবসান হয় তার অপেক্ষার। টিমোথি পেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন। এটি ছিল চলতি মৌসুমে তার ২২ ম্যাচে ১৮তম গোল। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে পিএসজির জার্সিতে ২০১তম গোল। আগের ম্যাচেই মার্সেইর বিপক্ষে দুই গোল গোল করে কাভানিকে স্পর্শ করেছিলেন তিনি। আজ তাকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।
তবে একটি রেকর্ডে এখনও এমবাপ্পের চেয়ে এগিয়ে কাভানি। পিএসজির হয়ে লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ ১৩৮ গোল তারই, তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোল ১৩৭টি। পরের ম্যাচে একটি গোল করলেই কাভানিকে স্পর্শ করবেন এমবাপ্পে। আর দুটি করলে ছাড়িয়ে যাবেন তাকে।
এই জয়ে ২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করল পিএসজি। সমান ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে নঁত আছে ১৩ নম্বরে। এক ম্যাচ কম খেলা মার্সেই ৫২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।