বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ২০২১ ও ২০২২ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস কিছুদিন পরই শেষ হবে। এরপরই নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেওয়া হবে বলে ৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি সমমান পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন শ্রেণি পাঠদানের নির্দেশনা রয়েছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান শিগগিরই শেষ হবে। এরপর থেকে সপ্তাহের প্রত্যেক দিন নবম শ্রেণির পাঠদান শুরু হবে। পরবর্তীতে এইচএসসির ক্লাস শেষ হলে অষ্টম শ্রেণির পাঠদানও শুরু হবে। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণির পাঠদান প্রতিদিন শুরু করা হবে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রেণি পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের ১১ দফা সিদ্ধান্ত বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতরে পাঠিয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত সিদ্ধান্তের ৪ নম্বর দফায় বলা হয়, ‘এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস কিছুদিন পরই শেষ হয়ে গেলে নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। ’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২১ সালের এসএসসির ক্লাস দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মধ্যে মাত্র তিনটি বিষয়ে ক্লাস করতে হবে। অ্যাসাইনমেন্ট চলছে। ফলে দ্রুতই শেষ হবে তাদের ক্লাস। এই ক্লাস শেষ হলে নবম শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন নেওয়া হবে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর নবম শ্রেণিসহ অন্যান্য শ্রেণির জন্য একদিন করে শ্রেণি পাঠদান চলবে। এরপর অষ্টম শ্রেণি আসবে। পরিস্থিতি বুঝে অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাসে আনা হবে, বলেন তিনি।
কার্যবিবরণীর ৪ নম্বর সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গোলাম ফারুক বলেন, ‘২০২২ সালের পরীক্ষার্থী হিসেবে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আসবে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার জন্য। নতুন ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত একাদশ থাকছে নেই। ফলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসতে হবে। এখানে সঠিকভাবে বিষয়টি ওঠে আসেনি।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ২১ দফা প্রস্তাবনা উঠে আসে। সভায় ১১ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে রয়েছে, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব পর্যায়ের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মাদ্রাসাগুলোয় পাঠদান শুরু হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন/কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক তদারকি করবে। তবে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস আপাতত বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে।
খোলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা করতে হবে।
এ বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীদের ক্লাস সপ্তাহে একদিন করে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরে তা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস কিছুদিন পরেই শেষ হয়ে গেলে নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে।
পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণির জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার প্রস্তুতি থাকবে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইসোলেশন সেন্টার হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে তা শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
কোনও স্থানে সংক্রমণের অবনতি/বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসন/শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
১২ বছরের ঊর্ধ্বের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।