রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় দোষী প্রমাণ করে কম্বোডিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কেম সোখাকে ২৭ বছর গৃহবন্দি রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারিকে সামনে রেখে তিন বছর ধরে চলা এই বিচার কাজে সোখার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ যোগাড় করতে সরকারি আইনজীবীদের সময় ও সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজধানী নম পেনের মিউনিসিপাল কোর্টের বিচারক কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির (সিএনআরপি) সাবেক প্রেসিডেন্টকে জানান যে, তাঁকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো।
কেম সোখাকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোনো ধরনের পরোয়ানা ছাড়াই মধ্যরাতে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ও একটি প্রাদেশিক কারাগারে বন্দি রাখা হয়। বেশ কয়েকবার জামিন বাতিল হওয়ার পর গৃহবন্দিত্বের দণ্ড নিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। সোখার বিরুদ্ধে কম্বোডিয়ার অপরাধ আইনের ৪৪৩ ধারার আওতায় ‘বিদেশি শক্তির সাহায্য নিয়ে ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক ও প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিক দল সিএনআরপি-কে নিষিদ্ধ করে এবং দলটির নেতাদের ছবি প্রদর্শনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ২০১৮ সালে কোনো কার্যকর বিরোধী দল ছাড়াই হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়।
কেম সোখা অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিলেন যে, তিনি শুধুমাত্র ব্যালটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চান।
এদিকে, আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) বিচারের রায় ঘোষণার পরপর কম্বোডিয়ায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিক মার্ফি টুইট বার্তায় জানান যে, অপরাধী প্রমাণিত হওয়ার ঘটনায় ওয়াশিংটন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
কম্বোডিয়ার সরকারি আইনজীবীরা অভিযোগ করেছিলেন যে, কেম সোখাকে রাজনৈতিক ষড়ন্ত্রের জন্য হাতেনাতে ধরা হয়েছে আর এর প্রমাণ হিসেবে তারা ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর দেওয়া এক ঘণ্টাব্যাপী একটি ভাষণ থেকে দুই মিনিটের রেকর্ড আদালতে জমা দেয়। ভাষণের ওই অংশে সোখা বলেছিলেন যে, ১৯৯৩ সাল থেকে তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল।