কট্টর বামপন্থী নেতা ও সাবেক বিদ্রোহী যোদ্ধা গুস্তাভো পেট্রো এখন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট। দেশটির অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচিত হলেন তিনি।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববার নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর জানা যায়, পেট্রো পেয়েছেন ৫০.৪ শতাংশ ভোট। অপরদিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রডলফো হারনান্দেজ পেয়েছেন ৪৭.৩ শতাংশ ভোট।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে পেট্রো হলেন কলম্বিয়ার ইতিহাসের প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট। এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুস্তাভো দেশের নির্মাণ শিল্পের ধনকুবের রডলফো হারনান্দেজকে ৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৭৫ ভোটে পরাজিত করেন।
খবরে বলা হয়, জয় পাওয়ার পর রাজধানী বোগোতায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন পেট্রো। এতে তিনি বলেন, কলম্বিয়ায় পরিবর্তন আসছে। এই বাস্তবিক পরিবর্তন আমাদেরকে উদ্দেশ্য হাসিলে সহায়তা করবে। এই রাজনীতি ভালোবাসার, বোঝাপড়ার এবং আলোচনার।
গুস্তাভোর এই বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তির হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ তিনি দেশে নতুন তেলক্ষেত্রের ওপর নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছেন। বিষয়টিতে ব্যবসায়ী শ্রেণী খানিকটা চমকে গেছে, যদিও তিনি বর্তমান চুক্তিকে সম্মান করবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে গুস্তাভো দুইবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন কিন্তু বিজয়ের মুখ দেখেন নি। গেরিলা আন্দোলনে যুক্ত থাকার সময় একবার সেনাবাহিনী তাকে আটক করে নির্যাতন করেছিল। সেক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে- কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তন আসতে পারে।
এর আগে পেট্রো একজন সিনেটর এবং বোগোতার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে তিনি ছিলেন একজন সশস্ত্র বিদ্রোহী যোদ্ধা। তিনি এম-১৯ মুভমেন্টের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একসময় জেলেও যেতে হয়েছিল তাকে।
তবে ৬২ বছর বয়স্ক পেট্রো এখন সবাইকে নিয়েই দেশ গড়তে চান। তিনি তার ভাষণে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন। বিরোধী নেতাদের মধ্যে যারা তার সবথেকে বড় সমালোচক ছিলেন, তাদেরকেও প্রেসিডেন্টের ভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পেট্রো।
তিনি সবার সঙ্গে কলম্বিয়ার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে চান বলেও জানান। জয়ের পর গুস্তাভো বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার অঙ্গীকার করেছন। বামপন্থী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দেশে বিনা বেতনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাশাপাশি পেনশন ব্যবস্থা ও অনুৎপাদনশীল জমির উচ্চ কর সংস্কারের কথা বলেছেন।