রাজধানীর কাঁচাবাজারে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। তবে সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া রয়েছে। শিম, বেগুন, টমেটো, গাজরের দর ১০০ টাকার ওপরে। সবজির সর্বনিম্ন মূল্য ৫০ টাকা। এ দামে পাওয়া যাচ্ছে মুলা।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি মাসের শেষদিকে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। ফলে সেসময় বাজার স্থিতিশীল হবে। স্বাভাবিকভাবেই দরপতন হবে।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর কাপ্তান বাজার, হাতিরপুল, সেগুনবাগিচা, নারিন্দা কাঁচা বাজার ও রায়সাহেব বাজারের খুচরা ও পাইকারি দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। কেজিতে টমেটোর দাম ১৩০ টাকা। কেজিপ্রতি গাজর বিকোচ্ছে ১৪০ টাকা য়। আর জাতভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-১০০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি লতি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫৫ টাকা ও মুলা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কেজিপ্রতি তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
আর আঁটিপ্রতি পুঁইশাক ২৫-৩০ টাকা, পালং ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, কলমি ও লাল শাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাতিরপুল বাজারের সবজি ব্যবসায়ী তানভীর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কিছু সবজির দাম কমেছে আর কিছু সবজির দাম বেড়েছে। শিম বাজারে নতুন সবজি, তাই দামও একটু বেশি। বাজারে এখন পর্যন্ত শুধু ঝিনাইদহ অঞ্চলের শিম পাওয়ার যাচ্ছে। বেগুন ও টমেটোর দাম আগের মতোই আছে। গত সপ্তাহেও একই দামে সবজি দুটি বিক্রি হয়েছে ।
এদিকে ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে ক্রেতা হামিদুল হক বলেন, কোনো সবজির দামই কমেনি, বরং বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা করে ফুলকপি কিনেছি। আজ সেটা ৬০ টাকা করে করে বিক্রি হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে মধ্যবিত্তের অবস্থা তত খারাপ হচ্ছে।
তবে ক্রেতা মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি সবজির দামই বাড়তি। গত সপ্তাহে এক পিস ফুলকপি কিনেছি ৪০ টাকায়। এখন সেটা কিনলাম ৬০ টাকায়। সময় যত গড়াচ্ছে, আমাদের অবস্থা তত খারাপ হচ্ছে। এদিকে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করি।
বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এসব বাজারে রসুনের কেজি ৪০ থেকে ৪৫, চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ ও আদা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়।
গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম ছিল ৮৪ থেকে ৮৮ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে ৫০ কেজির চিনির বস্তা কিনতেন ৪২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৩০০ টাকায়। দুইদিন আগে চিনি কিনতে হয়েছে ৪৫০০ টাকায়। তবে প্যাকেট জাত চিনির দাম গত এক সপ্তাহে বাড়েনি। সেগুলো প্যাকেটের গায়ে লেখা দামেই (৯৫ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের অস্থিরতায় লাগাম টানতে চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। কিন্তু সেটির প্রভাব এখনও পড়েনি খুচরা পর্যায়ে। বিক্রেতারা জানালেন, আমদানি করা চাল এখনও বাজারে আসেনি। তবে কপাল ভালো থাকলে নতুন মৌসুমে কমবে চালের দাম।
আমদানি নির্ভরতায় দীর্ঘদিন ধরে অনেকটাই চড়া নিত্যপণ্যের বাজার। এর মধ্যেই বহুজাতিক কোম্পানির প্যাকেটজাত পণ্যের দাম বেড়েছে অনেক।
এসব বাজারে দেশি মুশুরের ডালের কেজি ১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মুশুরের ডালের কেজি ১০০, লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।
এদিকে দাম কমেছে ডিমের। ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০, হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ থেকে ২২০ টাকা।
ডিম বিক্রেতা আশিক বলেন, ডিমে দাম বাড়ায় ক্রেতারা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। একারণে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ থেকে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়।
এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০, লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়।
১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা রুবেল বলেন- এখন পোল্ট্রি ফার্মের মালিকরা বলছেন, উৎপাদন কম ও খাবারের মূল্য অনেক বেড়েছে। এসব কারণে বেড়েছে মুরগির দাম।