বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে গত বছরের তুলনায় এবছর বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে। আরও আট ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ এখন ৮৪তম স্থানে। বৃহস্পতিবার (১৩ই অক্টোবর) আয়ারল্যান্ড ও জার্মান-ভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসছে।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৩৫টি দেশে ক্ষুধার মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার ক্রমশ বাড়ছে। বেড়ে যাচ্ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এমন মূল্যস্ফীতির জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকেই মূলত দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা।
প্রতি বছরের মত এবারো বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক প্রকাশ করেছে আয়ারল্যান্ড-ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং জার্মানির ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ। বিশ্বের ১২১টি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, শিশু স্বাস্থ্য আর সম্পদ বণ্টনে বৈষম্যের মতো বিষয়গুলোকে মাপকাঠি ধরে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। এতে গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৮৪তম। যা গত বছরে ছিল ৭৬তম স্থানে। আর প্রথম স্থানে রয়েছে বেলারুশ। এছাড়া পাকিস্তান, ভারত ও আফগানিস্তানসহ ৩৫টি দেশে ক্ষুধার মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়েছে বলে উঠে এসেছে প্রকাশিত সূচকে।
এদিকে, বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনও বেড়েই চলেছে। যা বিশ্ব নেতাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারতের মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর মাসে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক চার এক শতাংশে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে দেশটিতে। কয়েক দফা সুদের হার বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে না পারায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার আরও বেড়েছে। বছরের শেষ নাগাদ সেখানে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্র তহবিল-আইএমএফ। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও ৪৫ বিলিয়ন পাউন্ড কর ছাড় দেওয়ার ঘোষণার প্রভাবে দেশটির এ অবস্থা বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এই উচ্চ মূল্যস্ফীতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে আইএমএফ।
যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্পেন ও জার্মানিতে মূল্যস্ফীতির হার কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাতে দেশটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।
এদিকে, করোনা অতিমারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জার্মানির আন্তর্জাতিক আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আলিয়াঞ্জ জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে সম্পদ বৃদ্ধির হার চার দশমিক ছয় শতাংশে পৌঁছাবে। যা গত তিন বছরে সম্পদ বৃদ্ধির গড় হারের অর্ধেকেরও কম।