স্টাফ রিপোর্টার : শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাধারণ সদস্যদের দাবির মুখে গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফাকচারার্স এন্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশন (বিসিসিএমইএ) এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট মুক্ত বিসিসিএমইএ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সাধারণ সদস্যরা।
কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের দোসর যারা বিগত বছরগুলোতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চারকোল সেক্টর থেকে ফায়দা লুটেছে, এই শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করেছে তাদের অনেকেই প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ চারকোল ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে।
সর্বশেষ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সভাপতি প্রার্থী জয় হোসাইন যিনি চায়না আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ এ আওয়ামী লীগের দলীয় তহবিলে ১ কোটি টাকার ফান্ড প্রদান করে এবং চায়না থেকে নৌকা প্রতীকের ১০,০০০ ঘড়ি তৈরি করে আওয়ামী লীগের প্রচারণার কাজে প্রদান করেন।
শ্রীনগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মসিউর রহমান মামুনের অর্থদাতা হিসাবে এলাকায় পরিচিত। জুলাই বিপ্লবে উত্তরা এলাকায় ছাত্র জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে প্রচুর ফান্ড করে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে সফর সঙ্গী ছিলেন।
এছাড়া সহ-সভাপতি প্রার্থী সায়হাম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ, পাবনা জেলা শাখা। সায়েম খান পারিবারিক ভাবেই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। সে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পোস্টে ছিলেন। সাবেক সহ সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, পাবনা জেলা শাখা। সহ সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।
আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এহেন কাজ নাই যা তিনি করেন নাই। পাবনা শহরে তার এবং তার আওয়ামী পদধারী মামা আব্দুল আল মামুনের অত্যাচারে সকলে ভীতির মধ্যে থাকতেন। মামলা, হামলা, খুন, ছিনতাই, রাহাজানি সবকিছুতেই তার সংশ্লিষ্টতা ছিল।
এসোসিয়েশনের সহ- সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য নমিনেশন ফরম কেনার দিন থেকে তার ফেসবুক ডিএকটিভেট করে রেখেছেন। তিনি শেখ হাসিনার পতনের পর বিদেশে বসে প্রতিনিয়ত বতর্মান অর্ন্তবর্তী সরকার ও বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সাধারণ সদস্যদের ধারণা, তিনি নির্বাচনের আগে খুব গোপনে দেশে এসে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
আরেক সহ-সভাপতি প্রার্থী হীরু মুন্সী বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও পলাতক আব্দুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসাবে এলাকায় পরিচিত।
সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে আব্দুর রহমানের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রমে তিনি প্রতিনিয়ত অর্থদান করতেন এবং আব্দুর রহমানের নাম ও প্রভাব খাটিয়ে বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে প্রতিনিয়ত বিএনপি সমর্থকদের নামে হামলা মামলা দিয়ে আতংকিত করে রাখতেন। জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে তিনি ফ্যাক্টরিতে নিজে আগুন লাগিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা ও বিএনপি জামায়াত আগুন লাগিয়েছে দাবি করে এসোসিয়েশনের মাধ্যমে সরকারের কাছে ক্ষতি পূরণের দাবি জানায়।
এমন কি তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে অন্য ফ্যাক্টরিতে পাটখড়ি না দিতে ব্যাপারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন।
বোয়ালমারী উপজেলায় সবচেয়ে অত্যাচারী ও অর্থপ্রদানকারী আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর হিরু মুন্সির এহেন অপকর্ম নাই যা তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে করেন নাই। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তার জমি ভাড়া নিয়ে চায়নিজদের করা ফ্যাক্টরি নিজে জোর করে সব আত্বসাৎ করে নিয়ে চায়নিজদের ফ্যাক্টরি থেকে বের করে দিয়ে নিয়ে ফ্যাক্টরির মালিক হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়াতপুরের এক চারকোল ব্যবসায়ী বলেন, জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে আওয়ামী দোসরদের আমরা কোন ভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে দিবো না।
যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে আছে এবং যাদের বিরুদ্ধে বিগত জুলাই বিপ্লবে ছাত্রদের বিপক্ষে অর্থায়নের অভিযোগ আছে তাদের প্রার্থীতা বাতিলের জোর দাবি জানান ফরিদপুর এলাকায় আরেক জন ভোটার ও চারকোল ব্যবসায়ী।
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চারকোল সেক্টরে অস্হিতিশীলতা চলছে যার প্রভাব পড়েছে এ সেক্টরের রপ্তানি তে।
খাত সংশ্লিষ্টদের দাবি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ নিয়ন্ত্রণ সংস্হা সমূহকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহনের মাধ্যমে নির্বাচনের অচলাবস্থা দূরকরণে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহনের এবং উদীয়মান রপ্তানিমুখী একটি খাতকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার।