শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ছয় বছরের জন্য নারী ফুটবল দলের স্পন্সর ‘ঢাকা ব্যাংক’ দেশের ফুটবল নিয়ে উঠছে ব্যর্থতার নানা প্রশ্ন চাহিদা থাকলেও ভিসা জটিলতায় পিছিয়ে আমিরাতে শ্রমিক নিয়োগ ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রোববার ঈদ চীন সফর শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ভোটাধিকার হরণের চেষ্টা করলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে: মির্জা ফখরুল সংস্কারের কথা বলে জনগণের সাথে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে: রিজভী আগামীকাল ফ্রান্সে ঈদুল ফিতর ভারত-পাকিস্তান পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘোষণা করেছে সোমবার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হওয়া ৪১০টি মামলা প্রত্যাহার পরম শ্রদ্ধায় ড. ইউনূসকে বিদায় জানালো চীন ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে সংসদ নির্বাচনের সিল মারা ব্যালট উদ্ধার অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ অনুষ্ঠিত হবে সোমবার

খালিয়াজুরীসহ নেত্রকোনায় ধনু’র পানি বাড়ছেই, হুমকির মুখে ফসল রক্ষা বাঁধ

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : এপ্রিল ৫, ২০২২

বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে খালিয়াজুরী পয়েন্টে নদের পানি বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি বেড়ে যাওয়ায় খালিয়াজুরীসহ জেলার মদন ও মোহনগঞ্জের হাওরের বিভিন্ন ফসল রক্ষা বাঁধ হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় বোরোসহ হাওর অঞ্চলের ফসল নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকেরা।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, খালিয়াজুরী পয়েন্টে ধনু নদের বিপৎসীমা ৪ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। বেলা ১টার দিকে পানি ৪ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ মাত্র ১ সেন্টিমিটার বাড়লেই পানি বিপৎসীমা পার করবে। তিনি বলেন, ‘হাওরের ফসল রক্ষার অনেক বাঁধ হুমকির মধ্যে আছে। বাঁধের পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। বাঁধ রক্ষায় আমরা স্থানীয়দের নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধনু নদ ছাড়াও অন্যান্য নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এতে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলোতে পানির চাপ বেড়ে গেছে। মদনের ফতেপুর হাওর, মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওর, খালিয়াজুরীর কীর্তনখোলা হাওর, লক্ষ্মীপুর হাওর, চুনাই হাওর, বাইদ্যার চর, কাটকাইলের কান্দা, বৈলং হাওরের বেড়িবাঁধ হুমকিতে আছে। এসব বাঁধের কোথাও কোথাও ধস ও ফাটল ধরেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলোর সংস্কারকাজও চলছে।

বাঁধের বাইরের অংশ তলিয়ে প্রায় ৩টি উপজেলার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফসল রক্ষায় বিভিন্ন বাঁধের পাশে গতকাল সারা রাত ছিলেন কৃষকেরা। ভাঙন ঠেকাতে কোনো কোনো হাওরে উপজেলা প্রশাসন, পাউবো কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁশ, বস্তা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন।

অনেক এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও কাঁচা ধান কাটার হিড়িক পড়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করতে পারে। পানি ঢুকলেই ফসলহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

নেত্রকোনা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘হাওরের ফসল নিয়ে আমরা খুবই শঙ্কিত। মনে হচ্ছে, এবারের পরিস্থিতি ২০১৭ সালের মতো হতে পারে। হাওরের সব ধান এখনো কাঁচা। এক সপ্তাহ পর পানি এলে ধানের তেমন ক্ষতি হতো না।’

তিনি জানান, এবার নেত্রকোনায় সময়মতো বাঁধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শুধু বাঁধ দিয়ে ফসল রক্ষা হবে না। ফসল রক্ষা করতে হলে বাঁধের সঙ্গে নদ-নদী ও খাল খনন করতে হবে।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘নেত্রকোনায় তেমন কোনো বৃষ্টি হচ্ছে না। ভারতের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিই ভয়ের মূল কারণ। পাহাড়ি ঢলে ধনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। হাওরের বাঁধগুলো খুবই ঝুঁকিতে আছে। আমরা দিনরাত কৃষকদের নিয়ে মাঠে আছি।’

জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে দিনের বিভিন্ন সময় খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করছেন।

মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে খালিয়াজুরীর কীর্তনখোলা হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, হাওরের কৃষকদের একমাত্র ফসলই হলো বোরো। এ ফসলের ওপরই তাঁদের সারা বছরের খরচসহ সবকিছু নির্ভর করে। কৃষকদের ফসল রক্ষায় তাঁরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোনো বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢোকেনি। কিন্তু খুবই আতঙ্কে আছেন। পানি যেভাবে বাড়ছে, ভয় হচ্ছে। প্রশাসন, পাউবো কর্মকর্তা, কৃষক, জনপ্রতিনিধি—সবাই মাঠে আছেন।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ