রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দেশে মোট বেকার কত, জানাল বিবিএস ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হতে হবে: আমীর খসরু সময় মতো নির্বাচন না হলে আমরা মাঠে নামবো : জয়নুল আবদিন দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত বিমানবন্দর থেকে আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার ফ্রান্স-স্পেন সফরে যাচ্ছেন না প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিকত্ব থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান খলিলুরের স্থলপথে ভারতের আমদানি বিধিনিষেধ, আনুষ্ঠানিক চিঠি পায়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল বন্দরে আটকা পণ্যবাহী ট্রাক শেখ হাসিনার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় ভোমরা স্থলবন্দরে শিশুখাদ্য রপ্তানিতে শঙ্কা ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে আখাউড়া স্থলবন্দর ‘ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা সব রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তির দায়িত্ব’ নির্বাচন অবাধ-নিরপেক্ষ হওয়ার পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না: ডা. তাহের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে আপিল বিভাগের ফের শুনানি ১ জুলাই

খুনীদের আশ্রয় দেয়া দেশগুলো মানবতার ছবক শেখায়

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০২২
খুনীদের আশ্রয় দেয়া দেশগুলো মানবতার ছবক শেখায়

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের যারা আশ্রয় দিয়ে লালন পালন করেছে তাদেরকাছ থেকে মানবতার ছবক শুনতে হয়। তারা মানবতা লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।

আজ মঙ্গলবার (১৬ই আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধনীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কিছু নিয়ে যাননি। তিনি শুধু দিয়ে গেছেন। একটা জাতি দিয়ে গেছেন, দেশ দিয়ে গেছেন। গরীবকে যে রিলিফের কাপড় দেয়া হতো, সেই রিলিফের কাপড় দিয়ে তাকে দাফন দেয়া হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমি কিছু আশা করি না আমার একটাই কথা এ দেশ বঙ্গবন্ধু স্বাধীন করেছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। তাই আমার একটাই প্রচেষ্টা সব সহ্য করে নীলকন্ঠ হয়ে অপেক্ষা করেছি কবে ক্ষমতায় যাব। কবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করব।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। দেশকে তিনি এগিয়ে নিচ্ছেন। যতো বাধাই আসুক না কেনো দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন জিয়াউর রহমান যদি খুনী না বা ষড়যন্ত্রকারি না হন তাহলে খুনী মোশতাক তাকে সেনা প্রধান করবে কেন? আর সেই বা এই খুনীদের পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভূট্টোকে অনুরোধ করে তাকে দিয়ে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফিকে অনুরোধ করিয়ে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেবে কেন? পরবর্তীতে তাদের আবার বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরী দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।
খুনীদে আশ্রয়-প্রশয়ের বিষয়ে তিনি ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের ভুমিকা তুলে ধরে বলেন, তিনি খুনী পাশা এবং হুদাকে নিয়ে ‘প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি’ (প্রগশ) নামে একটি রাজনৈতিক দল গড়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জেলারেল এরাশাদ ক্ষমতায় এসে খুনী ফারুককে দিয়ে ‘ফ্রিডম পার্টি’ গঠন করায়। খালেদা জিয়া আরো একধাপ উপরে উঠে খুনী ফরুক, রশিদ এবং হুদাকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করে। ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনে হুদাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে এবং রশিদকে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত ঘোষণা করে সংসদে বিরোধী দলের নেতা বানায়। কাজেই তারা কিভাবে অস্বীকার করবে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে তারা জড়িত নয়?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপিতো এদের মদদদাতা। এদের লালন পালনকারী। ’৯৬ সালের ভোটার বিহীন নির্বাচন জনগণ মেনে না নিলে গণআন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় সেই নির্মম হত্যাকান্ড থেকে বেঁচে গেলেও সেই বাঁচা ছিল যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকা বলেন জাতির পিতার কন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে যদি তিনি সরকারে আসতে না পারতেন, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করতে না পারতেন তাহলে এই হত্যাকান্ডের বিচার কোনদিন হতোনা। তারপরেও ’৯৮ সালে যেদিন জাতির পিতা হত্যা মামলার বিচারের রায় হবার কথা সেদিনও হরতাল ডেকেছিল বিএনপি, খুনীদের বাঁচাতে। আর ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই খালেদা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন এই মামলার সব বিচারকার্য বন্ধ করে দেয়।

বেঁচে থাকলে সকলেই পাশে থাকে আর মরে গেলে যে কাউকে পাশে পাওয়া যায়না তাঁর প্রমান ১৫ আগষ্টের হত্যাকান্ডের পর ধানমন্ডী ৩২ নম্বর সড়কের ঐ বাড়িটিতে মৃতদেহগুলো পরদিন পর্যন্ত পড়েছিল বলেও তিনি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সব সহ্য করে নীল কন্ঠ হয়ে শুধু অপেক্ষায় থেকেছি কবে ক্ষমতায় যেতে পারবো আর এই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো এবং দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো। আর তাহলেই এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত প্রতিশোধ নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এই শোক সভায় আজকে আমরা এই প্রতিজ্ঞাই নেব- জাতির পিতার যে আদর্শ সেই আদর্শকে ধারণ করে এই দেশকে আমরা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তিনি বলেন, জাতির পিতা এদেশের মানুষর জন্য জন্য রক্ত দিয়ে গেছেন, রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা, ভাইয়েরা সেকথা আমি ভ’লতে পারি না। সেই মানুষগুলোর পাশে থাকা কর্তব্য বলে মনে করি। এখানে কোন মানুষ কষ্ট পাক আমরা তা চাইনা।

তিনি বলেন, যে নাম ঘাতকের দল মুছে ফেলতে চেয়েছিল আজ আর সেই নাম মুছতে পারবেনা। আজকে বিশ^ব্যাপী সে নাম সমাদৃত। সেই জয় বাংলা শ্লোগান আবার ফিরে এসেছে। ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বিকৃত ইতিহাস নয়, আজকে সঠিক ইতিহাস মানুষ জানতে পারছে। বিশ^ দরবারে আজ আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারছি, মাথা উঁচু করেই চলবো। কিন্তু এই দু:সময়ে দু;স্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যার যেটুকু সামর্থ সে অনুযায়ী মানুষের সেবা করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সূচনা বক্তৃতা করেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও বক্তৃতা করেন।

সভায় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষিয়ান নেতা আমি হোসের আমু ও তোফায়েল আহমদ, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক,আব্দুর রহমান ও এডভোকেট কামরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।
আরো বক্তৃতা করেন দলের মুক্তিয্দ্ধু বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মহানগর উত্তর সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও দক্ষিণ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ সভা সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ’৭৫ এর ১৫ আগষ্টের সকল শহীদ স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ