প্রশাসনের সহযোগিতায় নতুন জীবনের সন্ধান পেলেন সিরাজগঞ্জে জোড়া খুন মামলায় দণ্ড ভোগ করা হিরা আর মোমিন। দীর্ঘ চব্বিশ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে তারা স্বজন কিংবা বসতভিটার সন্ধান পাচ্ছিলেন না। তবে জেলা প্রশাসকের সুপারিশ আর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে মিললো আশার আলো। অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় দু’জনকে কিনে দেয়া হয়েছে দু’টি অটোরিকশা। বিপথগামীদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনতেই এমন উদ্যোগ বলে জানালেন জেলা প্রশাসক।
১৯৯৮ সালে সিরাজগঞ্জের পৌর এলাকার রহমতগঞ্জ মিল গেট এলাকায় জোরা খুন হয়। মামলায় আসামী হয় ৯জন। সেই মামলায় গ্রেফতার হয় কিশোর হিরা আর মোমিন। ২০০৩ সালে মামলার রায়ে ১ জনের ফাঁসি বাকী আটজনের যাবৎজীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। এই রায়ে মোমিন ও হিরার জেল হয় ২৪ বছর। তবে, দীর্ঘ দুই যুগ পর মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে বসতভিটা খুঁজে না পেয়ে দু’চোখে অন্ধকার নেমে আসে তাদের। মা-বাবা কিংবা সহায় সম্পদ কিছুই নেই তাদের। সৎ মা আর নানীসহ কিছু আত্মীয় বেঁচে থাকলেও অভাবের দুনিয়ায় তাদের ঠাঁই হয়না সেখানেও। মুক্ত পৃথিবীই তাই তাদের কছে হয়ে ওঠে আরেক কারাগার। যেখান থেকে মুক্তি পেতে ফিরে যায় আবার সেই জেলখানাতেই।
জেলসুপারের কাছে খুলে বলে তাদের অসহায়ত্বের কথা। সব শুনে তিনি তাদের নিয়ে যান জেলা প্রশাসকের কাছে। পরে জেলা প্রশাসকের সুপারিশে সমাজসেবা অধিদপ্তরে দু’জনকে দু’টি অটোরিকশা কিনে দেয়। সেই রিক্সা পেয়ে নতুন জীবন শুরু করেছে হিরা আর মোমিন। তবে, এখনো মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি তাদের। এজন্য সরকারের সহযোগীতা চাইলেন আত্মীয়রা।
কারাগারকে সংশোধনাগার ও বন্দীবান্ধব করতে সরকার কাজ করছে বলে জানালেন জেল সুপার আব্দুল বারেক। আর অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নেয়ার কথা বলেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুর রহমান।
অপরাধ সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতিতে সহায়তার আবেদন করার পর হিরা ও মোমিনকে পথচলার উপায় করে দেয়া হয়েছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক ফারুক আহাম্মদ। ভবিষ্যতে এমন অসহায় আরও কেউ থাকলেও পাশে দাঁড়ানোর কথা বললেন তিনি।