দেশে গুম বলে কোনো শব্দ নেই। যাদের সন্ধান মিলছে না তাদের অনেকেই আছেন আত্মগোপনে। বন্ধ আছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডও। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচলেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব বলেছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী। টাকার বিনিময়ে বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠি অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
সরকারের আমন্ত্রণে ৪ দিনের সফরে রোববার সকালে বাংলাদেশ আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট।
দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকে বসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে।
আধা ঘণ্টার বৈঠকে গুরুত্ব পায় মানবাধিকার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম প্রসঙ্গ। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবির দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ২০০৩-২০০৫ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে এসবের কিছুই হচ্ছে না। এমনকি গুম বলেও নেই কোন শব্দ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা তাদের বলেছি গুম বলে আমাদের দেশে কোনও শব্দ নাই। কিছু কিছু লোক বলেছে যে ৭৬ জন লোক নাকি গত ১০ বছরে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা বলছে সরকার এদের নিখোঁজ করেছে। সেই ৭৬ জনের ১০ জনকে আবার দেখা গেলো পাওয়া গেছে, তারা ঘুরাঘুরি করছে। আর বাকিগুলো আমরা ঠিক জানি না। উই লেট হিম নো। তাদের পরিবার কোনও তথ্য দেয় না। পরিবারকে বলা হলে তারা ভয়ে আর তথ্য দেয় না। এরা কোথায় গেছেন পাড়া প্রতিবেশি জানেন। ২০০২-০৩ ঐ সময়ে হার্টফেল করতো। হার্টফেলের সংখ্যা এখন আর নেই।
এরপর আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার। মন্ত্রী জানান, মানবাধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নো এনফোর্সিং এজেন্সির সদস্যদের হিউম্যান রাইটস সম্পর্কে ট্রেনিং দেয়ার ব্যাপারে কথা হয়েছে। তখন আমি বলেছি আপনারা একটা প্রস্তাব পাঠান আমরা অবশ্যই সে প্রস্তাব দেখবো। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানবাধিকারকে সাংঘাতিক মূল্য দেয়।
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন মিশেল ব্যাচলেট। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী দাবি করেন সব গুমের ঘটনা সত্য নয়, গুম হওয়াদের অধিকাংশই আছেন আত্মগোপনে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বিচার থেকে বাঁচার জন্যই তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সেটার একটা নমুনা আমরা তাকে দিয়েছি। পাওনাদার বেড়ে গেলে তাদের থেকে বাঁচার জন্যই তারাও গায়েব হয়ে যায়। আমাদের বর্ডারের ফাঁক ফোকর দিয়ে এরা বিভিন্ন দেশে চলে গিয়েছে।
সফরের শেষ দিন ১৭ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে নিজের বক্তব্য তুলের ধরবেন মিশেল ব্যাচলেট।