ইউরোপে বুধবার (২৭ জুলাই) থেকে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। কারণ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি গ্যাযপ্রম জানিয়েছে, তারা নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে গ্যাসের সরবরাহ পূর্ণ ক্ষমতার এক পঞ্চমাংশে নামিয়ে আনবে। এ অবস্থায় পুরো ইউরোপ যেন চোখে দুঃস্বপ্ন দেখছে। খবর: বিবিসি।
রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় প্রায় এক ডজন ইউরোপীয় দেশ ইতোমধ্যে চাপের মুখে পড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, এই শীতে যদি রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে।
জার্মানি ইতোমধ্যে গ্যাস রেশনিংয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে দাঁড়ালে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার হস্তক্ষেপ করবে এবং অগ্রাধিকার দেওয়া হবে গৃহস্থালি সংযোগ এবং জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে।
ফ্রান্সেও জ্বালানির অপচয় রোধে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফ্রান্সে যেসব দোকানে এয়ারকন্ডিশনিং চালু থাকে, তাদের দোকানের দরজা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে জ্বালানির অপচয় বন্ধ করার লক্ষ্যে। নিয়ন বাতির ব্যবহারও কমাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের সাড়ে সাতশো ইউরো জরিমানা করা হবে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি শেলের প্রধান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইউরোপে এবার শীতে জ্বালানি রেশনিং করতে হতে পারে। কয়েকদিন আগে জ্বালানি বিষয়ক এক সম্মেলনে বেন ভ্যান বাউরডেন বলেন, ইউরোপের সামনে এখন এক কঠিন শীতকাল।
জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, ‘মস্কো গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিলেও ইউরোপ যে ঐক্যবদ্ধ আছে, এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সেই বার্তা দেবে।’
রাশিয়ার গ্যাযপ্রম বলছে, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য টারবাইন বন্ধ রাখতে হচ্ছে, সেজন্যেই নর্ড স্ট্রিম ওয়ান দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ হ্রাস করতে হয়েছে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানী বিষয়ক প্রধান কাদরি সিমসন বলেছেন, এটি আসলে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের সরবরাহের ৪০ শতাংশই আসতো রাশিয়া থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় রাশিয়া পাল্টা এখন গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করছে।