৯ই মে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ দেখা দিতে পারে, পরে তা ১১ই মে’র দিকে ঘূর্নিঝড় অশনী আকারে রূপ নিতে পারে- এমনটি জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ে সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, গতকাল জানতে পেরেছি ভারত মহাসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি সাইক্লোনিক সিস্টেম ডেভেলপ করেছে। যেটা ৯ই মে’র মধ্যে হয়তো লঘুচাপে রূপান্তরিত হবে, যেটাকে আমরা ‘লো প্রেসার’ বলি। এরপর ধীরে ধীরে এটা সুস্পষ্ট লঘুচাপ বা লো প্রেসারের রূপ ধারণ করবে।
এরপর ১১ই মে’র দিকে নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। যদি ঘূর্ণিঝড় হয় তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হবে অশনী। এটার ল্যান্ডফলটা এখন পর্যন্ত ক্যালকুলেশন হয়নি। নিম্নচাপ ও ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টির পর বিস্তারিত জানাতে পারব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি ঘূর্ণিঝড় প্রবণ দেশ। আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, ঝড়ে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যার জন্য আমরা আজকে প্রাথমিক সভা ডেকেছি। এখানে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনা করেছি। কবে লঘুচাপ, কবে নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিটা স্টেপে আমাদের প্রস্তুতি কি, কাদের সংযুক্ত করব, কাদের দায়িত্ব দেবো, কোথায় কীভাবে নির্দেশনা দেবো সেগুলো আমরা আজ ঠিক করেছি। পরবর্তীতে যদি সতর্ক সংকেত দেয়া হয় তাহলে আমরা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে নির্দেশনাগুলো মাঠ পর্যায়ে দিয়ে দেয়া হবে।
‘আমাদের সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করছে, আমাদের যে এসওডি আছে সে অনুযায়ী কখন কী করতে হবে জানিয়ে দিয়েছি। সবাই আমরা এখন অ্যালার্ট। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিপিপি ভলান্টিয়ারদের অবহিত করা, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা, যদি গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে সেল্টার সেন্টারগুলো প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের প্রায় ৭ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র আছে, প্রয়োজনে স্কুল কলেজ ও অন্যান্য ভবন কাজে লাগাবো।
‘আম্ফানের সময় ১৪ হাজারের বেশি শেল্টার সেন্টার প্রস্তুত করেছিলাম। সেখানে প্রায় ২৪ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দিতে পেরেছিলাম, আমাদের সেই ক্যাপাসিটিও প্রস্তুত। আশা করি এটি মোকাবিলা করতে পারব।’
বাংলাদেশ সফলভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান।