শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচন নিয়ে বিপরীত মেরুতে সরকার-রাজনৈতিক দল! পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলার জামিন শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ কাল অবকাঠামো উন্নয়নের নামে প্রকৃতি নষ্ট না করার আহবান পরিবেশ উপদেষ্টার ‘শেখ হাসিনার মতো দুর্নীতিবাজকে আশ্রয় দিয়ে নিশ্চুপ পার্শ্ববর্তী দেশ’ মুক্তিযুদ্ধের সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা কখনোই শেখ মুজিব দেননি: মান্না পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড গাজা-স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন প্রয়োজন: ডব্লিউএইচও শুধু নির্বাচনের জন্য গণ-অভ্যুত্থান হয়নি : নুরুল হক নুর ট্রাম্পকে কড়া জবাব দিলেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ভাতা পাচ্ছেন ১৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিন, পুরোহিত ‘দুর্বল মেডিকেলগুলোকে সবলের সঙ্গে একীভূতকরণের চিন্তা করা হচ্ছে’ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ নিক পোথাসের পদত্যাগ ইউক্রেন সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ফোন প্রতারকদের খপ্পরে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী রিয়ালের দুর্দান্ত জয়, নিশ্চিত হলো শেষ আট

টালমাটাল অর্থনীতির মধ্যেই আফগানিস্তানে সরকার ঘোষণার প্রস্তুতি তালেবানদের

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২, ২০২১

বৃত্তান্ত ডেস্ক: টালমাটাল অর্থনীতির মধ্যেই যখন মনে করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত এগিয়ে না এলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ধসে পড়তে পারে দেশটির অর্থনীতি, ঠিক এমনই অবস্থার মধ্যেই  বিদ্রোহী তালেবানরা আফগানিস্তানে তাদের নতুন সরকার ঘোষণার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তালেবান কর্মকর্তা আহমদউল্লাহ মুস্তাকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, কাবুলের প্রেসিডেন্ট ভবনে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলেছে, যেকোনো সময় নতুন সরকারের ঘোষণা আসতে পারে।

আফগানিস্তানের অর্থনীতি যেহেতু ধুঁকছে, তাই আন্তর্জাতিক দাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছে নতুন সরকারের বৈধতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খরা ও যুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতি দীর্ঘদিন ধরেই টালমাটাল অবস্থায় আছে। খরা ও সংঘর্ষে প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার আফগান প্রাণ হারিয়েছেন।

তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেকোনো বিদেশি নাগরিক বা আফগানকে নিরাপদে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু কাবুল বিমানবন্দর এখনো বন্ধ থাকায় অনেকেই আফগানিস্তান ছাড়তে পারেনি। কাতারের একটি কারিগরি টিম বিমান বন্দরের কার্যক্রম ফের চালু করার জন্য আলোচনা করতে কাবুল পৌঁছেছে।

এদিকে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হায়বাতুল্লাহ আখন্দজাদা নতুন শাসন পরিষদে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হবেন বলে জানা গেছে। তার অধীনে কাজ করবেন প্রেসিডেন্ট।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার তিনজন সহকারী রয়েছে: গোষ্ঠীটির প্রয়াত সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মৌলভী ইয়াকুব, শক্তিশালী হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি, এবং গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল গনি বারাদার।

তালেবানের আগের সরকার চালাত একটি অনির্বাচিত লিডারশিপ কাউন্সিল। এবার গোষ্ঠীটি মধ্যপন্থি সরকার গঠনের চেষ্টা করছে। মানবাধিকার ও নারী অধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু তাদের এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দিহান ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য বিদেশী শক্তিরা।

ইউরোপিয়ান কমিশনের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গানার ওয়াইগান্ড বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও সহায়তা কর্মীদের নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে দেওয়ার শর্ত পূরণ না করলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসলামী গোষ্ঠীটিকে স্বীকৃতি দেবে না।

অর্থনীতিতে ধস

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, তীব্র খরা ও যুদ্ধের কারণে হাজার হাজার আফগান পরিবার ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও বলছে, তালেবান সরকার গঠন করলেও তাদের ‘পর্বতসম’ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষ করে অর্থনীতি, নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি সর্বোপরি সাধারণ আফগানদের মধ্যে তালেবানের প্রতি আস্থা প্রতিষ্ঠাই হবে দলটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

আফগানিস্তানে এখন টাকার জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। দেশের বাইরে আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০ বিলিয়ন ডলার মজুদ রয়েছে। সেই টাকা অচিরেই তালেবানের হাতে আসছে না।

তালেবানের নিয়োগ দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর ব্যাংকগুলোকে আশ্বস্ত করেছেন যে, গোষ্ঠীটি একটি পূর্ণ ক্রিয়াশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চায়। কিন্তু সেটি কীভাবে হবে, তা সম্পর্কে তিনি তেমন কিছুই জানাননি।

ধারণা করা হচ্ছে, চলতি অর্থবছরে আফগানিস্তানের প্রকৃত মোট দেশজ উৎপাদন ৯.৭ শতাংশ কমে যাবে। আগামী বছর কমবে ৫.২ শতাংশ।

দেশটির অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে হলে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। কিন্তু আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তার সীমা ও সময়কাল এবং তালেবানের সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির ফলাফল সম্পর্কে অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আরও কমেছে।

কাবুল পতনের পর থেকে দেশের ভেতরে-বাইরে টাকা স্থানান্তর প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আফগানরা সাধারণত ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও মানিগ্রামের মাধ্যমে টাকা পাঠায়। এই দুটি কোম্পানিই আফগানিস্তানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া শতাব্দীপ্রাচীন হাওয়ালা নেটওয়ার্কও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া বলেন, চাইলেও এখন আর কেউ আফগানিস্তানে ব্যবসা করতে পারবেন না। তার ওপরে তালেবানকে আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এ কারণে গোষ্ঠীটি আমেরিকায় থাকা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ফান্ড ব্যবহার করতে পারছে না। এ কারণে আফগান অর্থনীতির জন্য সামনে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ