শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দেশে শক্তিশালী উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলায় গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থান: এখনো শেষ হয়নি কোনো মামলার তদন্ত মার্কিন পণ্যে চীনের শুল্কছাড়ের খবরে কমলো স্বর্ণের দাম দেশে স্বর্ণের বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: দেশে আমদানি-রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা পেহেলগামকাণ্ডে আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় পাকিস্তান নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় ৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত গাজার মানুষ দুর্ভোগে আছে, নেতানিয়াহুকে ট্রাম্প আইপিএলে ফিক্সিংয়ের ভিডিও ফাঁস করলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার আবারও ফ্যাসিবাদের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ ঝাড়লেন তামিম বাংলাদেশে হিন্দু–মুসলমানে কোনো বিভেদ নাই: রুহুল কুদ্দুস দুলু ইনজুরিতে মাদ্রিদ ওপেন থেকে সরে দাঁড়ালেন আলকারাজ

ডায়রিয়ার প্রকোপ: সাত তাবু টানিয়েও সামলাতে নাকাল আইসিডিডিআরবি

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : মার্চ ২৭, ২০২২

বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: হাসপাতালের বাইরে সাতটি তাঁবুতেও ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। আসন সংকটে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। কেউ আবার হাসপাতালের ফটকের সামনেই মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। কেউ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও সুস্থ হওয়ার আগে তার সিট বাতিল করা হচ্ছে বলে রোগীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে।

আইসিডিডিআরবি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। হাসপাতালের বাইরে সাতটি তাঁবুতেও রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছেনা। রোগীদের বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক। তবে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।

রোববার বেলা ১১টায় দেখা যায়, হাসপাতালের ফটক দিয়ে অসংখ্য রোগী ও তাদের স্বজনরা ঢুকছেন। রোগীদের অধিকাংশই সিএনজি ও অ্যাম্বুলেন্সে আসছেন। কিন্তু হাসপাতালের ফটকে গিয়ে পর্যাপ্ত হুইলচেয়ার পাচ্ছেন না। অনেক রোগীকে কোলে করে হাসপাতালের ভেতর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এর মধ্যে জরুরি বিভাগের সামনে রোগী ও স্বজনদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে ভর্তি করতে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও দৌড়ঝাঁপ করছেন।

দুপুর সাড়ে ১২টায় যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ থেকে চিকিৎসার জন্য আইসিডিডিআরবি আসেন নাজির হোসেন (৬০)। কিন্তু হুইলচেয়ার না পেয়ে তাকে মাটিতে রাখেন তার পরিচিতজন মাসুদ। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরও কোনো হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি। পরে কোলে করে তাকে হাসপাতালের ভেতর নেওয়া হয়।

মাসুদ বলেন, নাজির হোসেন তার সঙ্গে যাত্রাবাড়ীতে হকারি করেন। গত রাত থেকে তার ডায়রিয়া। কিন্তু ঢাকায় তার পরিবারের কেউ নেই। তাই খবর পেয়ে নাজিরকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি।

মালিবাগ এলাকায় ভিক্ষা করেন জহিরুল ইসলাম। ২৫ মার্চ থেকে তার ডায়রিয়া। ২৬ মার্চ সকাল ১০টায় আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি হন তিনি। রবিবার সকাল ১০টায় তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তখনো জহিরুলের সুস্থ্য হয়নি।

জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর ৪০ মিনিটের মধ্যে দুইবার টয়লেটে যেতে হয়েছে। কিন্তু আমাকে হাসপাতাল থেকে ডাক্তার বের করে দিয়েছে। সঙ্গে মাত্র তিনটা স্যালাইন ও এক পাতা ট্যাবলেট দিয়েছে।

জহিরুলের মতো এমন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে কোনো চিকিৎসক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তারা রোগীদের চিকিৎসা দিতেই ব্যস্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইসিডিডিআরবির এক চিকিৎসক জানান, ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ঘণ্টায় ৬০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। আইসিডিডিআরবির ৬০ বছরের ইতিহাসে এত রোগীর চাপ তারা দেখেননি। ফলে হাসপাতালের শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় তাঁবু টানিয়ে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে আইসিডিডিআরবি। এখন আইসিডিডিআরবিতে প্রায় ১৩০০ রোগী ভর্তি আছেন।

আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন) এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান জানান, হাসপাতালে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসাসেবা বিষয়ে আজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন চিকিৎসকরা।

আইসিডিডিআরবি সূত্র বলছে, সারাবছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রোগীর সংখ্যা কিছু বাড়ে। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ