প্রতিদিন ডেঙ্গুতে প্রাণহানির মধ্যে নতুন করে শঙ্কা বাড়িয়েছে জিকা ভাইরাস। গত তিন মাসে নারী পুরুষ মিলে অন্তত আটজন নতুন এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গুর মতো এডিসের মাধ্যমে ছড়ালেও জিকা ভাইরাস গর্ভবতী নারীর গর্ভজাত সন্তানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গর্ভের নবজাতকের মৃত্যুও ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
আইইডিসিআর ভাইরোলজিস্ট ডা. মো. আব্দুল্লাহ উমর নাসিফ বলেন, ‘গতবছর কিছু কেস পাওয়া যায়, এবছরও কিছু কেস পাওয়া গেছে। জিকা ভাইরাস সাধারণত মৃদু ধরনের সিনড্রোম করে। ৮০ শতাংশের বেশি রোগী আসলে অ্যা-সিড্রোমেটিক, কোনো ধরনের সিনড্রোমই আসলে প্রকাশ পায় না। ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে যা প্রকাশ পায় বেশিরভাগই মৃদু। দুই থেকে চার দিন জ্বর, শরীরে র্যাশ আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে জয়েন্ট পেইন, শরীর ব্যথা করে।’
প্রাপ্ত বয়স্করা আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক সম্পর্কের কারণে নারীর শরীরেও ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস। সেই নারী ঐ সময় গর্ভাবস্থায় থাকলে আক্রান্ত হতে পারে শিশুও। এছাড়া জিকার সঙ্গে গুলেনবারি সিনড্রোম বা এক ধরনের প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘বড়দের যদি হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে ইনক্যাফালাইটিস, জিবিএস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি গর্ভবতী নারীদের যদি এই কেস থাকে তাদের কাউন্সেলিং করাটা জরুরি।’
এবারই প্রথম বাংলাদেশে ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস একসঙ্গে শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া অনেক বছর পর চিকুনগুনিয়াতে অর্ধশতাধিক মানুষ আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস নিধনে ব্যর্থ হলে আগামীতে এই তিন ভাইরাস একসঙ্গে সংকট আরও বাড়তে পারে।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘আমরা যখনই আবার কোথাও থেকে কোনো সংবাদ পাবো সেখানে আমরা আমাদের টিম পাঠাবো। আমাদের সক্ষমতা আছে কিন্তু এটার সাথে লজিস্টিক জড়িত আছে। আমাদের যতটুকু সক্ষমতা আছে আমরা চাচ্ছি ইনিশিয়ালি যতগুলো কেস আসে আমরা সবগুলো টেস্ট করবো। এবং আমাদের বুথ এখন ওপেন।’
এ বছর হাসপাতাল থেকেই সন্দেহভাজন রোগীদের আইইডিসিআর এর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও জিকা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত আট জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আসিডিডিআরবি, আইডিসিআরসহ হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালে জিকা ভাইরাস শনাক্তের ব্যবস্থা রয়েছে।