শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণে জাতিসংঘ চরমভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন বিশ্বসংস্থাটির মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বাংলাদেশে ড. ইউনূসের প্রতি সরকারের বিদ্বেষমূলক আচরণে উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট করে মুখপাত্র ডুজারিক বলেন, ড. ইউনূস জাতিসংঘের অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা চরম উদ্বেগের।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের গ্রামীণের একাধিক কার্যালয় জোর করে দখলে নেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, ‘নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস (আজ বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার দলীয় লোকেরা তার সব গ্রামীণ কার্যালয় দখল করে নিয়েছে। আপনি হয়তো জানেন যে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। তার এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কী অবগত রয়েছেন?’
জবাবে ডুজারিক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব ভালো করেই অবগত রয়েছি। আমি দ্যর্থহীনভাবে ফের বলতে চাই, ড. ইউনূস জাতিসংঘের কাছে খুব মর্যাদাবান একজন ব্যক্তি। তিনি জাতিসংঘের একজন অংশীদার হিসেবে বছরজুড়ে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচীতে দূত হিসেবে অংশ নেন। মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল, সাসটেইনঅ্যাবল ডেভেলপমেন্ট গোলসহ সংস্থার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলোতে তিনি সহযোগিতা করে থাকেন। ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে তা আমাদের চরমভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমসহ আটটি প্রতিষ্ঠান দখল হওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছি। কারণ, আমাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন নিজেদের মতো করে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য?’
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কিছু যুবক গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে এসে জড়ো হন। এ সময় কিছু নারীকে ঝাড়ু হাতে দিয়ে টেলিকম ভবনের সামনে পাঠানো হয় এবং তারা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।