ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও বাড়তে শুরু করেছে দেশের নদ-নদীর পানি। এ কারণে উন্নতি হতে শুরু করা দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ফের অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যার পানি নামতে শুরু করায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে অনেকেই, ঘরে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু নদ-নদীর পানি বাড়ায় তা আবারও শঙ্কার মধ্যে পড়লো। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়া দেশের সকল প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
সিলেটে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে গতকালের তুলনায় সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি কিছুটা বেড়েছে। সুরমার কানাইঘাট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীতে এর প্রভাব না পড়লেও সারি নদী ও ধলাই নদের পানি বেড়েছে। এদিকে, নগরির মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, যতরপুর, শাহজালাল উপশহর এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর সড়কে রয়েছে পানি।
সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪০ হাজারের বেশি কাঁচা বাড়িঘর আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক
এদিকে, মৌলভীবাজারে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় পানিবন্দি সাধারণ মানুষ এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বন্যার কারণে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন, তাদের শিগগিরই বাড়ি ফেরা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সুরমা,যাদুকাটা, রক্তি, পাটলাই নদীর পানি কমতে শুরু করায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। তবে, দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষদের। এখনো পানিবন্দী হাজারো মানুষ। পানি কমার সাথে সাথে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেট অঞ্চলে আগামী চার-পাঁচদিন স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলেও, এরপরে ভারি বর্ষণ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে তিস্তা ও ধরলার নদীর পানি কমতে শুরু করায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বাড়ীঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পানি কমলেও এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে ৩৮৩ হেক্টর জমির ফসল। এখনো নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ১০হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। বন্যার্তদের সরকারী ও বেসরকারী সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ চলছে। এদিকে পানি কমার সাথে সাথে তিস্তা ও ধরলা নদী এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।