ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই নাটকীয়তা আর রুদ্ধশ্বাস থাকবে এটাই স্বাভাবিক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দ্বৈরথে সেই চিরচেনা রূপই দেখা গেল। তবে নখ কামড়ানো উত্তেজনা শেষে হেরেছে পাকিস্তান। আর বিরাট কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটিংয়ে জিতলো ভারত।
মেলবোর্নে আগে ব্যাটিং করে ১৫৯ রান তোলে পাকিস্তান। জবাবে শেষ ওভারের বল বাই বল নাটকীয়তার পর জয় পেয়েছে ভারত। এর আগে প্রতিটা বলেই ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো একবার ভারতের দিকে আরেকবার পাকিস্তানের দিকে দুলছিল। ৪ উইকেটের জয়ে এগিয়ে রইলো কোহলিরা।
নামবো নামবো করেও মেলবোর্নের আকাশ থেকে নামেনি বৃষ্টি। হয়তো অপেক্ষায় ছিল একটা মহারণ দেখার। হার-জিত যাই আসুক লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে এমনটা ছিল সবার প্রত্যাশা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দেখায় সেই প্রত্যাশা মিটিয়েছে ভারত-পাকিস্তান। গ্যালারিতে লাখো দর্শকের সমারোহে মুহূর্তে মুহূর্তে বদলেছে ম্যাচের রং।
টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরে গত বছরের আসরে দশ উইকেটে জেতে পাকিস্তান। আর এ বছরের এশিয়া কাপের সুপার ফোরেও হাসেন বাবর আজমরা। তবে এবার বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচে প্রতিশোধ নিল ভারত।
বিগ ম্যাচে টস জিতে বোলিং নেয় ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ভরসা বাবর আজম গোল্ডেন ডাক মারেন, রিজওয়ান ফিরে যান ৪ রান করে। তিনে নামা শান মাসুদ এবং চারে নামা ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান তোলে পাকিস্তান।
শান মাসুদ খেলেন ৪২ বলে হার না মানা ৫২ রানের ইনিংস। ইফতিখার ধুঁকতে থাকা ইনিংসে প্রাণ ফেরান। ছোট্ট ঝড় তুলে ফিরে যাওয়ার আগে ৩৪ বলে চারটি ছক্কা ও দুই চারে ৫১ রান করেন।
জবাব দিতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩১ রানে ৪ উইকেট হারায় কোহলিরা। একে একে ফিরে যান ওপেনার রোহিত শর্মা (৪) এবং লোকেশ রাহুল (৪) সূর্যকুমার যাদব (১৫) ও অক্ষর প্যাটেল (২)।
তবে দাঁতে দাঁত চেপে হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি। ইনিংস মেরামতের পর তোলেন ঝড়। শেষ ওভারে পান্ডিয়া ফিরে যাওয়ার আগে বিরাটের সঙ্গে গড়েন ১১৩ রানের দুর্দান্ত জুটি। ৩৭ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ৪০ রান করেন পান্ডিয়া।
আর ম্যাচ শেষ করে ফেরা বিরাট কোহলি ৫৩ বলে খেলেছেন ৮২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। যে ক্যামিও ইনিংস সাজানো ছয়টি চার ও চারটি ওভার বাউন্ডারিতে।
শেষ ওভারে ভারতের দরকার ১৬। প্রথম বলেই আউট হন পান্ডিয়া। পরের দুই বলে আসে তিন রান। ৩ বলে ভারতের দরকার ১৩ রান। হুট করেই খেই হারান নওয়াজ। চতুর্থ বলে নো করেন স্পিনার নওয়াজ। ছক্কা হাঁকান কোহলি। ফ্রি হিট বলটা ওয়াইড দেন। বল তখনও বাকি ৩টা রান প্রয়োজন আর ৩! দুই বলে ২ দরকার থাকতে আউট হন কার্তিক। পরে আবার ওয়াইড দিলে শেষ বলে ভারতকে জিতিয়ে লাফিয়ে ওঠেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন।