শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, শনাক্ত ১৮৬ কলকাতা মিশনে ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করল বাংলাদেশ ভারতের অপপ্রচারে আমাদের কোনো ক্ষতি নেই : উপদেষ্টা সাখাওয়াত ‘বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে কঠোর জবাব দেয়া হবে’ পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, বিজিবির কড়া প্রতিবাদ আমাদের ঘৃণা করে এমন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নয়: রিজভী ঐক্যবদ্ধ থাকলে ধর্ম নিয়ে বিভেদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না: খন্দকার মোশাররফ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় ৪৯ গণমাধ্যমে গুজবের ছড়াছড়ি ‘স্বৈরাচারের দোসররা এখনও ষড়যন্ত্র করছে’ দিল্লি চলো কর্মসূচি ঘিরে আবারও উত্তাল ভারত শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমলেও ভোগ্যপণ্যে নাভিশ্বাস অ্যাটলেটিকোর জয়, ঘরের মাঠে নাপোলির পরাজয় বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে বড় বিদ্রোহ হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

নাফ নদী থেকে সরে গেছে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : জুন ১৫, ২০২৪
নাফ নদী থেকে সরে গেছে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপের আশপাশে গোলাগুলি এবং মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ থেমে গেছে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দারা গতকাল শুক্রবার (১৪ জুন) ভোররাত থেকে আজ শনিবার বেলা একটা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে এ ধরনের আর কোনো শব্দ শুনতে পাননি।

অন্যদিকে, নাফ নদীর মোহনায় অবস্থানরত মিয়ানমারের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজটি শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দেখা যাচ্ছে না।

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের শাহ পরীর দ্বীপ বদরমোকাম এলাকায় দুদিন ধরে অবস্থান করা মিয়ানমারের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজটি সেখান থেকে সরে গেছে। যুদ্ধজাহাজটি পরে মিয়ানমারের জলসীমানায় অভ্যন্তরে নাইক্ষ্যংদিয়া অংশে অবস্থান করছিল। গতকাল সন্ধ্যার পর সে স্থান থেকেও সরে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।

আদনান চৌধুরী বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার বেলা একটা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আর কোনো গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি এসব তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে বড় জাহাজটি অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি একের পর এক মিয়ানমার থেকে সার্ভিস ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এ জন্য আপাতত এ নৌপথ দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথ সাগর উপকূলীয় পথেই সেন্ট মার্টিন যাতায়াত করবে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলিবর্ষণের ফলে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। এ ছাড়া সীমান্তের ওপারের যেসব এলাকায় এখন গোলাগুলি চলছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের বসতি রয়েছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার সারারাত বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পুরো টেকনাফ। শান্তিতে লোকজন ঘুমাতে পারেনি। তবে শুক্রবার ভোররাত থেকে শনিবার বেলা একটা পর্যন্ত আর কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। নতুন করে যাতে সীমান্ত পেরিয়ে কোন লোক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’

সেন্ট মার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সীমান্তে শুক্রবার ভোররাত থেকে আর গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে দ্বীপে বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। কখন থেকে তারা আগের নৌপথে (টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন) যাতায়াত করতে পারবে, সেটি নিয়ে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার মানুষ চিন্তিত রয়েছেন। কারণ, বর্তমানে পথেই চলাচল করা হচ্ছে তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি আগের তুলনায় শান্ত। তবে যদি সেখানে বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হয়, আবারও রোহিঙ্গাদের ঢল নামতে পারে।

শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়া দোকানদার আবুল কালাম বলেন, ‘এখানে কয়েক দিন ধরে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে সীমান্তে বসবাসরত লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি।’

স্থানীয় জেলে নুর আলম বলেন, ‘নাফ নদীর চরে আগে জাকি (ঝাঁকি) জাল দিয়ে মাছ ধরতে পারতাম। মিয়ানমার সীমান্তের উত্তেজনার কারণে আমরা কয়েক দিন ধরে মাছ শিকারে যেতে পারছি না। ফলে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা সাড়ে তিন মাস মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু দখলের জন্য লড়ছে তারা।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ