রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় আরোপিত অসাংবিধানিক ও বিদ্যমান আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বিধানসমুহের ব্যাপারে এবি পার্টি তাদের ৪ দফা পর্যবেক্ষণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে অবহিত করেছে। সকাল ১১ টায় এবি পার্টির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সাথে নির্বাচন ভবনে তাঁর অফিসে সাক্ষাৎ করেন।
এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া ও দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ্ আল মামুন রানা।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে সিইসি’র সাথে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব আব্দুল হালিম ও সিনিয়র সহকারী সচিব রওশন আরা বেগম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নতুন দল হিসেবে এবি পার্টি গঠন সম্পর্কিত বিষয়গুলো অবহিত হন এবং এবি পার্টির পর্যবেক্ষণগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
এবি পার্টির পর্যবেক্ষণে নেতৃবৃন্দ বলেন-
নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) কমিশন কর্তৃক আরোপিত সকল শর্ত পুরণ সাপেক্ষে আবেদনপত্র জমাদানের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আরোপিত শর্ত পুরণ করতে গিয়ে এবি পার্টি যেসকল বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তা হলো—-
১ . দল নিবন্ধনের আগেই দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার কিংবা ৫% ভোট প্রাপ্তির বিষয়টি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর।
২ . এত অল্প সময়ের মধ্যে এক- তৃতীয়াংশ জেলা এবং ১০০ টি উপজেলায় অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১২৩ টি কার্যকর অফিস থাকার বিষয়টি কোনো অনিবন্ধত দলের পক্ষে প্রায় দুঃসাধ্য একটি শর্ত বলে এবি পার্টি মনে করে। কারণ হিসাবে তারা বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে অনিবন্ধিত কোন রাজনৈতিক দলের নামে অফিস ভাড়া দিতে কোন ভূমি মালিক রাজি হতে চায় না। এছাড়া, নতুন দলগুলোর আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এত বিপুল সংখ্যক অফিস নিজেদের পক্ষে ক্রয় করাও অসম্ভব। মাঠ পর্যায়ে সরকারি দলের হুমকি, ভীতিপ্রদর্শন ও প্রশাসনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়টিও উল্লেখ করেন তারা।
৩ . ১০০ টি উপজেলার প্রতিটিতে ২০০ জন ভোটার সদস্যের সমর্থনের প্রামাণিক দলিলের যে বিষয়টি বলা হয়েছে তা কার্যকর করতে গিয়ে এবি পার্টি বাধার সম্মুখীন হয়েছে উল্লেখ করে করোনা ও সরকারি বিধি নিষেধের কথা বলে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ ও সরকারি দল ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে।
৪. দলের নামে ব্যাংক হিসাব খোলার যে বিধান রাখা হয়েছে তা বর্তমান ব্যাংকিং আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। নিয়মানুযায়ী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে সকল দালিলিক প্রমাণাদি দাবি করে থাকেন তা সরবরাহ করা কোন অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দল করা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। এক্ষেত্রে যে কোনো নতুন দলকে সহায়তা করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তারা সহযোগিতা না করে নানা অযৌক্তিক ও বাড়তি শর্ত আরোপ করে নতুন দলগুলোর নিবন্ধিত হবার পথ প্রায় রুদ্ধ করে রেখেছে, যা প্রকারান্তরে নতুন দলগুলোর বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর মুখাপেক্ষী হবার দিকে ঠেলে দেয়।
এবি পার্টির পক্ষ থেকে সিইসি কে পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ দফা পর্যবেক্ষণ সম্বলিত চিঠি নির্বাচন কমিশন সচিবের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ কে হস্তান্তর করা হয়।