বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: নৌদুর্ঘটনা তদন্ত, নৌযানের নকশা অনুমোদন ও অভ্যন্তরীণ মাস্টার-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষার দায়িত্ব নৌ পরিবহন অধিদপ্তর থেকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে গ্রিন কাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি)।
জিসিবি’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি, স্বতন্ত্র নকসা অনুমোদন কমিটি ও অভ্যন্তরীণ মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় ওই সুপারিশ তুলে ধরে তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্রর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড এনভায়রণমেন্ট ডেভেলপমেন্টের (মেড) নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ।
আলোচনার শুরুতে সুপারিশমালা তুলে ধরেন জিসিবির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। তিনি বলেন, সমুদ্রগামী জাহাজের প্রায় ১০ হাজার নাবিকসহ অভ্যন্তরীণ নৌযানের শ্রমিকদের অবিলম্বে করোনা-টিকা দিতে হবে। যে কোন নৌদুর্ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অভিজ্ঞ নৌস্থপতি, নৌপ্রকৌশলী, পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, মাষ্টারমেরিনার, নৌ গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক, জ্যৈষ্ঠ গণমাধ্যমকর্মী এবং নৌ মন্ত্রণালয়, নৌ অধিদপ্তর, নৌযান মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। আধুনিক ও ত্র“টিমুক্ত নৌযান নির্মাণের স্বার্থে নকসা অনুমোদনের দায়িত্ব একাধিক সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র নকসা অনুমোদন কমিটি গঠন করতে হবে।
সুপারিশে আরো বলা হয়, নৌযানের ফিটনেস যথাযথভাবে পরীক্ষার জন্য শূন্যপদগুলোতে অবিলম্বে নিয়োগ দিয়ে ‘শিপ সার্ভেয়ার’ সংকট নিরসন ও বার্ষিক সার্ভে প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কোন শিপ সার্ভেয়ার কোন মাসে কতোগুলো নৌযান নিবন্ধন ও সার্ভে করছেন তা নামসহ সেই তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
দক্ষ নৌযানচালক তৈরির লক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিসহ এ ধরনের কারিগরি শিা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ‘অভ্যন্তরীণ মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা বোর্ড’ গঠন করতে হবে। অধিদপ্তর থেকে সমুদ্রগামী নাবিকদের সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি), অভ্যন্তরীণ নৌযানচালকদের সনদ নবায়নসহ অন্যান্য সেবা ও নৌযান মালিকদের নিবন্ধন-বার্ষিক ফিটনেস সনদ পেতে অহেতুক কালপেন, অর্থব্যয় ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী বলেন, বিরাজমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে জিসিবি যেসব সুপারিশ উত্থাপন করেছে, নৌখাতের উন্নয়নের জন্য সেগুলো বাস্তবসম্মত। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে হলে নদ-নদী রা ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন তিনি।