পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। গেল শুক্রবার রাত থেকে দেশটিতে আবারও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
দেশটির গণমাধ্যম কলম্বো পেইজ জানিয়েছে, এই অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। এরই মধ্যে দেশটির মন্ত্রিসভাকে জানানো হয়েছে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে মাহিন্দা রাজাপাকসে তার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন। এদিকে, দেশটিতে গত পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, জনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতেই জরুরি আইন জারি করা হয়েছে। তবে, জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও তা উপেক্ষা করে শনিবার কলম্বোসহ দেশেটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে নামে লাখো মানুষ। কয়েক জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্টস হাউসে একটি বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সেখানে মাহিন্দাকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেন গোতাবায়া।
কলম্বো পেজ জানিয়েছে, গোতাবায়ার সেই অনুরোধে সম্মতও হয়েছেন মহিন্দা। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য- প্রসন্ন রানাতুঙ্গা, নালাকা গোদাহেওয়া এবং রমেশ পাথিরানা, সকলেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে সম্মত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য উইমলাভিরা ডিসানায়েকে বলেছেন যে মহিন্দার পদত্যাগ দেশের সংকট মোকাবিলায় নিরর্থক প্রমাণিত হবে।
এদিকে গতকাল মধ্যরাত থেকে ফের একবার জরুরী অবস্থা জারি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। সরকার বিরোধী ক্ষোভ সামাল দিতেই এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের। প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আইনের প্রয়োগ যথাযথ করার জন্য তিনি এই কড়া আইন প্রয়োগ করেছেন। এদিকে শ্রমিক সংগঠনগুলি দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের ডাক দিয়েছে সংগঠনগুলো। এই আবহে স্বাস্থ্য, পোস্টাল, বন্দর, সহ সরকারি সমস্ত বিভাগে ধর্মঘট পালন চলছে।
গত কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কা তীব্র খাদ্য এবং বিদ্যুতের ঘাটতির সাথে লড়াই করছে। দেশটি এর জন্য প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে বাধ্য হয়েছে। কোভিড মহামারী চলাকালীন পর্যটনের বন্ধের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেয় দ্বীপরাষ্ট্রে। এর জন্য এই মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেদেশে। আর এই কারণে সেদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষই এখন বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে সেখানে।