শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
‘যারা শহীদ হয়েছে তাদের রক্তে সাথে বেইমানি করা যাবে না’ নরেন্দ্র মোদী পুণ্যস্নান করলেন ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে’ চার প্রদেশ ও নতুন দুই বিভাগের প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের অনির্বাচিত সরকার কখনো নিরাপদ না: জামায়াতের নায়েবে আমির আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল সরে দাঁড়িয়েছেন মেয়েদের জাতীয় দলের প্রধান কোচ থানায় হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হত্যা মামলায় শাহজাহান ওমরসহ তিনজন গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে গাজা উপত্যকা: ট্রাম্প সুইডেনে স্কুলে গুলি, নিহত ১০ তাপমাত্রার সাথে বাড়বে কুয়াশার দাপট উত্তরবঙ্গের সব পেট্রল পাম্প অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই খালাস

পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধের পর কে কি বলেছিলেন

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ২৫, ২০২২
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধের পর কে কি বলেছিলেন

বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন সত্যি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে খুলে যায় বাংলাদেশের দখিনের দুয়ার।

পদ্মা সেতুর মনগড়া দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনকে সরে যেতে হয় শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার থেকে। তখন থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে অনেক দূরে ছিলেন। পদ হারিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে। পরে সংসদ নির্বাচনে পাননি দলীয় মনোনয়ন।

তবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশেই ছিলেন সেই সময়ে যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়া আবুল হোসেন।

পদ্মা সেতুর মনগড়া দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনকে সরে যেতে হয় শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার থেকে। তখন থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে অনেক দূরে ছিলেন। পদ হারিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে। পরে সংসদ নির্বাচনে পাননি দলীয় মনোনয়ন।

তবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশেই ছিলেন সেই সময়ে যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়া আবুল হোসেন।

সেতুর কাজ শুরুতে প্রথমেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছিল প্রকল্পে দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ। বিশ্ব ব্যাংক প্রথমে এই প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাব নিয়ে এলেও ঋণচুক্তির পরও দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তুলে সরে যাওয়ার পর সরকারের সঙ্গে তৈরি তাদের দুরত্ব।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হার না মানা অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত তাদের বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তব রূপ পেয়েছে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার খবর আসে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। ওই সময় কানাডা পুলিশ এসএনসি লাভালিনের দুই কর্মকর্তাকে বাংলাদেশের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ঘুষ সাধার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।বিশ্ব ব্যাংক নিজেরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানায়।

বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর সরকারের পক্ষ থেকে তা বারবারই নাকচ করা হচ্ছিল। তবে প্রকল্পের কাজ বন্ধই থেকেছে।

এই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে ২০১২ সালের ২৯ জুন পদ্মা প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্ব ব্যাংক। বিশ্ব ব্যাংক যুক্তি দেখায়, এই প্রকল্পে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ মিলেছে।

ঋণ বাতিলের সিদ্ধান্ত বদলানোর বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তদন্তের শর্ত দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। তখন তদন্ত এবং প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে চালাতে সরকার চাইলেও ২০১২ সালের ২ ডিসেম্বর বিশ্ব ব্যাংক সাফ জানিয়ে দেয়, মামলা না হলে ঋণ মিলবে না।

এর মধ্যেই মন্ত্রীর পদ ছাড়েন সৈয়দ আবুল হোসেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর ছুটিতে যান সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান।

প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুদক জানায়, মূল সেতু নির্মাণে প্রাকযোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে কোনো রকম দুর্নীতি হয়নি।

তবে বিশ্ব ব্যাংকের তাগিদে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে দুদক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল জাহিদ ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করেন, যাতে সেতু বিভাগের তখনকার সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান করে সাতজনকে আসামি করা হয়েছিল।

অন্য আসামিরা হলেন- সেতু কর্তৃপক্ষের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোস্তফা, এসএনসি-লাভালিনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, এই সংস্থার আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহ ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস।

মামলার আগে অভিযোগ অনুসন্ধানে মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ নূরে আলম চৌধুরীর ভাই নিক্সন চৌধুরী, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াউল হকসহ ২৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক কর্মকর্তারা।

কানাডার আদালতে এসএনসি-লাভালিনের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ, কোম্পানির তিন কর্মকর্তা ও দুদকের মামলার আসামি কেভিন ওয়ালেস, রমেশ শাহ ও ইসমাইলের জবানবন্দি সংগ্রহ এবং রমেশের ডায়েরি সংগ্রহ করতে ২০১৩ সালের মে মাসে দুদকের তৎকালীন প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক এবং দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম কানাডা গিয়েছিলেন। তবে জবানবন্দি কিংবা ডায়েরি পাননি তারা।

এর মধ্যে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এই বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা সরকার দিলে পরের বছরের সেপ্টেম্বরে দুদক ওই মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দেয়। দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণে ‘দুর্নীতি বা ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি’।

এরপর একই বছরের অক্টোবর দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতির আদেশ দেয় আদালত।

এ মামলায় মোশাররফ হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পাশাপাশি সরকারি চাকরি থেকেও সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি মুক্তি পান। ২০১৩ সালের জুনে বরখাস্তের আদেশও প্রত্যাহার করে তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসরে গিয়ে বর্তমানে জার্মানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

ছয় বছর ধরে বিচারিক কাজের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ বিশ্ব ব্যাংক তুলেছিল, তার প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানায় কানাডার আদালত। ২০১৭ সালে এই মামলার তিন আসামিকে কানাডার আদালত খালাস করে দেয়।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণা এলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় সরকার। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক এই সংস্থার সমালোচনা আসে।

তখনই ২০১২ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, “পদ্মা সেতু করার জন্য দেশে আমাদের ১৬ কোটি মানুষ আছে, ৮০ লাখ প্রবাসী আছে। বাংলার মানুষ সারা জীবন কি অন্যের সাহায্যে চলবে? নিজের পায়ে দাঁড়াবে না? আত্মনির্ভরশীল হবে না? পদ্মা সেতু আমরা করবই।”

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর ঘোষণা সারাদেশে যে সাড়া ফেলেছিল, তাতে অভিভূত হন প্রধানমন্ত্রী নিজেও।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে নিতে বাজেট থেকে বরাদ্দ দিতে শুরু করে সরকার। অর্থ বরাদ্দ প্রথম আসে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে। এর আগে ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ব ব্যাংককে জানিয়ে দেয়া হয় যে, এই প্রকল্পের জন্য তাদের ঋণ নেওয়া হবে না।

পদ্মা সেতুর নকশা ঠিক রেখেই এরপর শুরু হয় সেতু নির্মাণের বাকি কাজগুলো। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে সরকার পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দ দেয় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। পরের বছরগুলোতেও প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়ে গেছে সরকার।

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধের পর দেশের বিজ্ঞজনেরা সে সময় কে কি বলেছিলেন তা নিম্নে তুলে ধরা হলো।

(১) খালেদা জিয়া
১৭ অক্টোবর ২০১১
স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের কোন উন্নয়ন থকতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বাতিল করলো।
২ জানুয়ারি ২০১৮
ছাত্রদলের এক আলোচনায় বিএনপি নেত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সরকার। কিন্তু পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না। এ সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। এ সেতুতে কেউ উঠবেন না। অনেক রিস্ক আছে।

(২) ড. আকবর আলি খান
১ জুলাই ২০১২
বিশ্ব ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবর্তীতে ঋণ সহায়তা পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে পড়বে। যখনই কোন দাতা সংস্থা কোন নতুন প্রকল্পে অর্থায়নে অগ্রহী হবে, তারা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখবে। সরকার যদি বিকল্প অর্থায়নে পদ্মা সেতু কাজ শুরু করে, তাহলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে, কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।

(৩) বদিউল আলম মজুমদার
দুর্নীতি যে আমাদের পেছনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের উন্নয়নের ধারাকে নষ্ট করছে, এই ঘটনা তারই আরেকটি উদাহরণ।

(৪) আলী আহসান মনসুর, নির্বাহী পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটি
বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগকে ‘দুঃখজনক ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সুশাসনের অভাবে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প আজ অনিশ্চয়তার মুখে।

(৫) ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
বিকল্প উৎস হতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা (দুর্নীতির অভিযোগের ওপর থেকে)

দৃষ্টি সরানোর উপায় বলে মনে হতে পারে। যদি এই সিদ্ধান্ত সফলও হয় তাতেও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে না।

(৬) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
১০ জুলাই, ২০১২
বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্টভাবে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে- প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী।

(৭) এম কে আনোয়ার
নিজস্ব অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মতো ক্ষমতা বাংলাদেশের নাই।

(৮) বিএনপি
২৩ জুলাই, ২০১২
অভিযোগ ওঠার দশ মাস পরে যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ এটাই সমাণ করে যে, এই প্রকল্পে আসলেই দুর্নীতি হয়েছে।

(৯) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
২৪ জুলাই, ২০১২
আবুল হোসেনের পর এটাই প্রমান করে যে, দুর্নীতির সকল অভিযোগ সত্য। তিনি যদি আগেই পদত্যাগ করতেন তাহলে (বিশ্বব্যাংক) ঋণচুক্তি বাতিল করতো না।

(১০) ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
এখন অনেক দেরি হয়ে গেলো। কয়েক মাস আগে বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগ আনলো তখনই (পদত্যাগ) হওয়া উচিত ছিল।

(১১) ড. আলি আকবর খান
অনেক দেরিতে আসলো এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত, আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।

(১২) খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
২৮ জুলাই, ২০১২
আবুল হোসেন কোন দেশপ্রেমিক নন, তিনি একজন নির্লজ্জ ব্যক্তি। তাই তিনি বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ আসার ১০ মাস পরে পদ ছেড়েছেন। একজন দুর্নীতিবাজের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী এতদিন সাফাই গেয়েছেন।

(১৩) ব্রি. জেনারেল (অব) এএসএম হান্নান শাহ, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য
শেখ হাসিনা একজন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী। তারও উচিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।

(১৪) অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, সাবেক ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আবুল হোসেন যদি দেশপ্রেমিক হয় তাহলে দেশপ্রেমিক নয় কে? তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন এটাই প্রমাণ যে জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের রাজনৈতিক দলে থাকার অধিকার রয়েছে।

(১৫) মাহমুদুর রহমান মান্না
কেন প্রধানমন্ত্রী কাউকে দেশপ্রেমিক বলে সার্টিফিকেট দিতে হবে আর কেনইবা সেটা লন্ডন গিয়ে করতে হবে? প্রধানমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী যোগাযোগমন্ত্রীর যদি আত্মসম্মানবোধ থাকতো তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার সাথে সাথেই তিনি পদত্যাগ করতেন।

(১৬) বিএনপি
৬ ডিসেম্বর, ২০১২
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।

(১৭) আলি ইমাম মজুমদার
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের ক্ষেত্রে দুদক নিজেদের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দুদক যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন করতো তাহলে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতো না। উন্নয়ন সহযোগীদের পাশাপাশি দেশের জনগণও দুদকের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভূমিকা আশা করে।

(১৮) ড. সালেহ উদ্দীন, প্রাক্তন গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করার যে পরিকল্পনা করেছে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার ইচ্ছা করলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে, কিন্তু শেষ করতে পারবে না।

(১৯) আইনজীবী শাহদীন মালিক

পদ্মা সেতু দেশি অর্থায়নে হবে না, সম্ভব নয়।

(২০) ড. আহসান এইচ মনসুর, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক
১ জুলাই, ২০১২
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলেও শেষ করার গ্যারান্টি থাকবে না।… এই মুহূর্তে সরকার নিজস্ব অর্থে করতে গেলে ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে এবং টাকার মান ব্যাপকভাবে কমে যাবে। বাড়বে অযাচিত মুদ্রাস্ফীতি।

(২১) ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডি, সম্মানীয় ফেলো
এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন। যা জোগান দিতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়বে। এর দায় সরকার এড়াতে পারবে না। …তবে এজন্য তাদেওর ভয়ঙ্কর নতুন সমস্যায় পড়তে হবে।

(২২) প্রফেসর মোস্তাফিকুর রহমান, সিপিডি, সম্মানীয় ফেলো
এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু শুরু করনা হলে দেশের অন্যসব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা যেত সেগুলো আর হবে না।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ