পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসলেন রনিল বিক্রমাসিংহে। দেউলিয়া এই দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে টেনে তুলতে আইএমএফ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হতে পারেন তিনি। অর্থনৈতিক নীতিতে আসতে পারে বড় পরিবর্তন। তবে সফলতা নিয়ে আছে শঙ্কা।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একসময় রোল মডেল ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেসব এখন শুধুই সুখস্মৃতি। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি আর নেতাদের অদূরদর্শী নীতির কারণে এখন দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা।
জনবিক্ষোভের তোড়ে প্রথম কাটছাট-রদবদল ও সবশেষ পুরো মন্ত্রিসভাই ভেঙে ফেলা হয়েছে। ষষ্ঠবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক রনিল বিক্রমাসিংহে। তবে এবার দায়িত্ব হতে যাচ্ছে সবচেয়ে কঠিন।
পাঁচ হাজার কোটি ডলার বিদেশি ঋণে ডুবে আছে দেশ। উত্তরণে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের কাছ থেকে নিতে হবে নতুন ঋণ। যা পেতে দরকষাকষিতে দেখাতে হবে দক্ষতা। একইসঙ্গে জাপান, চীন, ভারতের মতো অংশীদার দেশগুলোর সহায়তা চলমান রাখতে হবে। এ বিষয়ে অবশ্য নিজের একটি পরিকল্পনা আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন তিনি। যার একটি অংশ ২০২০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার দলের নির্বাচনি ইশতেহারেও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর পদ নেয়ার কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৬টি কমিটি গঠন করবেন। নেবেন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী নীতি।
পার্লামেন্টের ২২৫ আইনপ্রণেতার মধ্যে ১৬০ জনের বেশি রনিল বিক্রমাসিংহেকে সমর্থন করছেন। যদিও পার্লামেন্টে নিজের দল ইউএনপির একমাত্র সদস্য তিনি। আভাস দিয়েছেন, তার মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন অন্য দলগুলোর নেতারাও।
তবে ভঙ্গুর অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীল দ্বীপরাষ্ট্রে রনিল বিক্রমাসিংহের সফলতার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ এর আগে ১৯৯৩ সালের পর ৫ বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও কখনই মেয়াদ পুরো করতে পারেননি তিনি।
তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখতে আপত্তি জানিয়েছেন বেশ কিছু ধর্মীয় নেতা। তাদের দাবি, এ সিদ্ধান্তে সংকট সমাধান নয় বরং গোতাবায়া সরকার আরও পাকাপোক্ত হতে পারে।