শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের সংকট কমাতে নতুন বছরের প্রথমদিনেই তাদের মাঝে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ হয়ে আসছে ২০১০ সাল থেকেই। তবে এবার একসঙ্গে সব বই হস্তান্তর নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৩৪ কোটি পাঠ্যবইয়ের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাপা হয়েছে মাত্র ৫ কোটি। পহেলা জানুয়ারির বই উৎসবের দু’মাসেরও কম সময় বাকি। অথচ প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কয়েকটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি এখনো চুড়ান্তই হয়নি।
প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি এখনো কোনো মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কাগজের অনুমোদন দেয়নি। এরইমধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপানোর ঠিকাদারি পাওয়া কয়েকটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান কাজ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে এনসিটিবিকে। এদিকে, মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠদানের সিদ্ধান্ত হলেও, সেই পাঠ্যক্রম চুড়ান্ত করতে দেরী হওয়ায় এখনো পাণ্ডুলিপি দিতে পারেনি।
এবার ১০৫টি প্রতিষ্ঠানকে বই ছাপানোর দায়িত্ব দিয়েছিল এনসিটিবি। চার মাস আগে এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হলেও নানা জটিলতা কাটিয়ে গত সপ্তাহ থেকে ছাপার কাজ শুরু করে হয়েছে। কাগজ সংকট, কাঁচামাল সংকট, কাগজের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংকটে ব্যহত হচ্ছে বই ছাপার কাজও।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক নিয়ে এবছর প্রায় ৩৪ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। এজন্য প্রয়োজন ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন কাগজ। দেশের ৮টি প্রতিষ্ঠান বই ছাপানোর কাগজ সরবরাহ করে থাকে। মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বইয়ের কাগজের যোগান দিতে পারবে পেপার মিলগুলো।
চার মাস আগে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর নির্ধারিত খরচের তুলনায় কাগজের দাম প্রতি টনে বেড়েছে ৩০ হাজার টাকা। এসবসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে সময়মতো মানসম্মত বই পৌছানো নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন মূদ্রণ ও বিপনন সংশ্লিষ্টরা।
তবে এনসিটিবির চেয়ারম্যান জানালেন, শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো বই তুলে দেয়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। মান নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নন। সংকট বুঝে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা সুযোগসন্ধানী আচরণ করছে বলেও অভিযোগ এনসিটিবির চেয়ারম্যানের। প্রেসগুলোয় বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে, যে কোনো মূল্যে যথাসময়ে শিশু-কিশোরদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে চায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি।