পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব। ৩ দিনের উৎসবের আজ প্রথম দিন ফুল বিজু উদযাপন করেন চাকমা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তারা পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা।
বাংলা বর্ষপঞ্জির শেষ দু’দিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন, এই তিনদিন ধরে যা উদযাপন করা হয় বৈসবি। উৎসবকে ঘিরে এখন আনন্দে মুখরিত পাহাড়ের জনপদ। এটি পাহাড়ি জনপদের প্রধান সামাজিক উৎসব। যা ত্রিপুরাদের কাছে বৈসু, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই এবং চাকমাদের কাছে বিজু নামে পরিচিত। এই তিন উৎসবের প্রথম অক্ষর নিয়ে নামকরণ করা হয়েছে ‘বৈসাবী’।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে ফুল বিজু উদযাপনে নদী, ঝিরি বা লেকের পাড়ে জড়ো হন চাকমা ছেলে-মেয়েরা। ঐতিহ্যবাহী রঙিন পোশাকে নিজেদের সাজান ছোট-বড় সকলে। এরপর কলাপাতায় ফুল সাজিয়ে ভাসিয়ে দেন পানিতে। পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ। এ সময় সবার মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করেন তারা। পহেলা বৈশাখ ঘিরে এই উৎসবকে সম্মিলতভাবে বলে বৈসাবি।
ত্রিপুরারা হিন্দু ধর্মের অনুসারী হলেও উৎসব পার্বণে রয়েছে ভিন্নতা। গরিয়া দেবতার পূজার মাধ্যমে শুরু হয় ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
চাকমা ও ত্রিপুরাদের মতো মারমাদেরও রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। বাংলা নববর্ষের একদিন পরে ১৫ই এপ্রিল থেকে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব।
সকল সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদে যেন বৈসাবি উৎসব উদযাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে নিরাপত্তা বাড়নো হয়েছে বলে জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ।
আগামীকাল শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৮টায় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাংগ্রাই উৎসব শুরু হবে। এছাড়া ৪দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে রোববার (১৪ এপ্রিল) বুদ্ধ স্নান, পিঠা উৎসব, সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাজার মাঠে মৈত্রী পানি বর্ষণ ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) মৈত্রী পানি বর্ষণের মাধ্যমে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং সকল সম্প্রদায় এ উৎসব উপভোগ করতে পারবেন।