ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা আন্তন গেরাশচেঙ্কো দাবি করেছেন যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবর অনুযায়ী, গত ১১ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত প্রকাশ্যে ছিলেন না রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তবে ২৪ মার্চ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা যায় তাকে।
সের্গেই শোইগু বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দাবি করে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ফেসবুকে লিখেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার জন্য ধমকের সুরে পুতিনের ‘কঠোর অভিযোগের’ পর শোইগুর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।
তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর কথিত স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে, প্রায় দুই সপ্তাহ প্রকাশ্যে উপস্থিতি না থাকার কারণে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোথায় আছেন, তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে শুক্রবার (২৫ মার্চ) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রথম ধাপ শেষ হয়ে গেছে। এখন পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলকে পুরোপুরি স্বাধীন করতেই বেশি জোর দেওয়া হবে। ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের ৯৩ শতাংশ ও দোনেতস্কের ৫৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে বিদ্রোহীরা। এই দুই অঞ্চল মিলেই ডনবাস গঠিত।
অন্যদিকে রাশিয়ার জেনারেল স্টাফের মূল আভিযানিক পরিদফতরের প্রধান সের্গেই রুডোস্কোই বলেন, অভিযানের প্রাথমিক ধাপ অনেকটা শেষ হয়েছে। ইউক্রেনের বিমান ও নৌবাহিনীর বড় অংশ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এতে অভিযানের প্রথম ধাপ সফল হয়েছে বলা যায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্য’ মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।
ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দোনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে ইউক্রেনে রুশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।