শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
স্বর্ণের দামে রেকর্ড, ভরি এক লাখ ২০ হাজার ছুঁই ছুঁই রিজার্ভ কমে আবারও ২০ বিলিয়নের নিচে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ঢাকায় ভিসা কেন্দ্র খুলল চীন সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত মন্ত্রী-এমপিদের সন্তানদের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা আ.লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর : ওবায়দুল কাদের আমরা এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারিনি : রিজভী কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুক্রবার ২৪ এপ্রিল ব‌্যাংকক যা‌চ্ছেন প্রধানমন্ত্রী তিনদিনের সফরে ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল ‘জাতির পিতা বেঁচে থাকলে দেশ আরও উন্নত হতো’ দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট স্থগিত বন্যায় পাকিস্তান-আফগানিস্তানে নিহত শতাধিক স্মরণকালের রেকর্ড বৃষ্টিতে অচল আরব আমিরাত

প্রতারণায় জড়িত ১৯ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করেছে তিন গোয়েন্দা সংস্থা

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : নভেম্বর ১, ২০২১

বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: দেশে শত শত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ১৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করেছে দেশের তিন গোয়েন্দা সংস্থা। শনাক্ত করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নামসহ তাদের কার্যক্রমের বিস্তারিত প্রতিবেদন পৃথক পৃথকভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন সমন্বয়ের কাজ করছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, ইভ্যালির কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা পরিচালনার ধরণ, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহির বিষয়। আলোচনা-সমালোচনার এক পর্যায়ে দেশে ই-কমার্স খাত কীভাবে পরিচালনা করা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন গ্রহণের প্রক্রিয়া কেমন হবে এবং তাদের লাইসেন্স প্রাপ্তির পদ্ধতি বা যোগ্যতা কী হবে তা নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি কমিটি গঠন করে।

কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউইটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমানকে প্রধান করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ব্যাংক, আইসিটি ডিভিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়. অর্থ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ই-ক্যাব সদস্যসহ ১৫টি মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, বিভাগ, সংস্থার ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গত ১৮ অক্টোবর কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই দেশে প্রচলিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড যাচাই-বাছাই করে একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে।

জানা গেছে, তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ভিন্নতা রয়েছে। একটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩টি। আরেকটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৭টি। অপরটির মতে দেশে অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৯টি।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানের নাম- ঠিকানা, যারা পরিচালনা করছে তাদের জীবনবৃত্তান্ত এবং ব্যবসায়ের ধরণ কেমন তা রয়েছে বলে জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকার গঠিত কমিটি এসব প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে আরও সুনিশ্চিত হতে চায়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন, ব্যবসায়িক ধরন বা কৌশল অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি জানিয়েছেন, সবকিছু কঠোর অনুসন্ধানের মধ্য দিয়েই আমরা অভিযুক্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে চাই । এর আগে গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। চূড়ান্ত অনুসন্ধানে যদি তালিকাভুক্ত কোনও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইভ্যালিসহ যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিটি তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কমিটি এখন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও গোয়েন্দা সংস্থা তিনটির কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাইবে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করবে সরকার গঠিত কমিটি।

আগামী ১১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করার আগে ৯ নভেম্বর চূড়ান্ত বৈঠকে বসছেন এইচ এম সফিকুজ্জামানের কমিটি। সেখানেই চূড়ান্ত হবে প্রতিবেদন, যা ১১ নভেম্বর কেবিনেট ডিভিশনে জমা দেওয়া হবে। ওই প্রতিবেদনেই উল্লেখ থাকবে এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া।

এর বাইরেও ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা করতে আরও একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেটির প্রধান করা হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এইচ এম সফিকুজ্জামানকে। তাকে ডিজিটাল কমার্স আইন প্রণয়ন ও কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

ডিজিটাল কমার্স আইন প্রণয়ন ও কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক এইচএম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের প্রক্রিয়া কেমন হবে তা নির্ধারণসহ অন্যান্য কর্মকৌশল আগামী এক মাসের মধ্যে জানানো হবে। আশা করছি, ১৫ দিন থেকে ১ মাসের মধ্যে অনলাইন নিবন্ধন শুরু করা যাবে।

তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ইউনিক বিজনেস আইডি এরই মধ্যে আমাদের একটি কমিটি ফাইনাল করেছে। আজ এটা উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটার প্রাথমিক অনুমোদন আমরা দিয়েছি। একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এটি ডিজিটাল করে দেবে। যারা ই-কমার্স ব্যবসা করবে তাদের আবশ্যিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যে অনুশাসন দিয়েছেন, আমরা মনে করি, ২ মাসের মধ্যেই ইউনিক আইডির বিষয়ে আমরা সাড়া পাবো।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ