বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের দুই বছর পর ঢাকাসহ সারাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) সন্তানদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনে জরিপ শুরু করেছে সরকার।
একইসঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানী ঢাকায় একটি দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করতে ভবন ভাড়া করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য সম্প্রতি ভবন ভাড়া নেওয়ার বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন) একেএম ফজলুজ্জোহা জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ঢাকায় একটি দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করে পাইলটিং করা হবে। এজন্য ভবন ভাড়া নেওয়ার বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে। পাইলটিং শেষ হলে সারাদেশেই দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব হবে।’
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করার সময় সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানদের পুনর্বাসনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেনার পর ঢাকা মহানগরে কর্মরত, অবসরপ্রাপ্ত সকল সরকারি কর্মচারীর বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তানদের কিংবা তাদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব সন্তানের জন্য ঢাকা মহানগরে একটি দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর তথ্য সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয় সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড। ১৪ সেপ্টেম্বর একটি নির্দেশনা দিয়ে জরিপ ফরম বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ই-মেইলে সরাসরি তথ্য পাঠাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অনুরোধ জানান সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক (সচিব) ড. নাহিদ রশীদ।
তথ্য সংগ্রহ ফরমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তির নাম, মায়ের নাম, অথবা বৈধ অভিভাবকের নাম, পিতার নাম অথবা বৈধ অভিভাবকের নাম, পিতা বা মায়ের কর্মস্থলের পদবি ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তির বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (যদি থাকে), জন্মনিবন্ধন সনদ নম্বর, জন্ম তারিখ (খ্রিস্টব্দে), ২০২১ সালের ১ অক্টোবর তার বয়স কত, কোন লিঙ্গ, কোন ধর্ম তা উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে ফরমে।
এছাড়া অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারস বৈশিষ্ট্য, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী মাঝারি নাকি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, তার (প্রতিবন্ধী) ধরণ উল্লেখ করতে হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্নতার (প্রতিবন্ধী) মাত্রা এবং কোন কোন ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, তা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
ক্র্যাচ, শ্রবণযন্ত্র, সাদাছড়ি, ওয়াকার, আতশীকাঁচ, হুইল চেয়ার, বিশেষ জুতা, মানসিক অসুস্থতাজনিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, ডাউন সিনড্রোমজনিত প্রতিবন্ধী, বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী কিনা, তারও তথ্য জানাতে হবে।
এছাড়া পিতামাতার ফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি, মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে নির্ধারিত ফরমে।
এর আগে দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) সকল ব্যক্তির সেবা ও শিক্ষা উন্নয়নে জরিপসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় সরকার। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এবার আলাদা করে দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হলো।