মঞ্চে গান গেয়েই বিদায় নিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ তথা কে কে। বলিউডে নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য ভালোবাসার গান উপহার দিয়েছেন ভক্তদের। হিন্দি রোমান্টিক গানের লিস্টে গায়ক কে কে-র স্থান অন্যতম। বলা যায় বলিউডের রোমান্টিক গানের প্লে-লিস্ট কে কে-কে ছাড়া অসম্পূর্ণ।
তবে নিজের ভালোবাসার মানুষকে সারাজীবনের জন্য কাছে পেতে নিজের আরেক ভালোবাসা ‘গান’ ছেড়েছিলেন তিনি। ‘গান’কে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন সেলসম্যানের চাকরি।
গানের মধ্যেই ডুবে থাকতেন প্রয়াত গায়ক কে কে। গানের আদ্যোপান্ত নিয়েই বাঁচতেন তিনি। এমনকি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মঞ্চে গান গেয়েছেন তিনি। কিন্তু তার কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণাকে বিয়ে করতে গানের ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়েছিলেন কে কে। যদিও সেটি ছিল খুব স্বল্প সময়ের জন্য।
কৈশোরকাল থেকেই জ্যোতির সঙ্গে কে কে-র প্রেম। কথা দিয়েছিলেন প্রেমিকাকে বিয়ে করার। তবে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করার জন্য শর্ত দিয়েছিলেন জ্যোতির বাবা-মা। প্রেমিকাকে বিয়ে করতে হলে চাকরি করতে হবে তাকে। কিন্তু সেই সময়ে কে কে ছিলেন বেকার। যেখানে গান নিয়েই ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন কেকে সেখানে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে সেই স্বপ্ন দূরে ঠেলে দিয়ে সেলসের চাকরি নেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিয়ে করেন ভালোবাসার মানুষ জ্যোতিকে।
তিন মাসের চাকরি করে ছেড়ে দেয়ার পর ধীরে ধীরে শুরু হয় তার বলিউডে পথ চলা। জ্যোতিকে বিয়ের ৮ বছর পর ১৯৯৯ সালে কেকে-র প্রথম অ্যালবাম ‘পল’ রিলিজ হয়। দুই দশক পার হয়ে গেলেও তার গানের জনপ্রিয়তা কমেনি বিন্দু মাত্রও। এরপর থেকে তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। কৃষ্ণকুমার কুনাথ থেকে হয়ে ওঠেন সবার প্রিয় কে কে। এক টিভি প্রোগ্রামের সাক্ষাৎকারে নিজের একথা জানিয়েছিলেন শিল্পী নিজেই।
জ্যোতি এবং কে কে-র দাম্পত্য জীবন ছিল তার গানের মতোই সুরেলা, যার মধ্যে রয়েছে মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো স্নিগ্ধতা। কিন্তু কে কে-র এভাবে বিদায় নেয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না জ্যোতি এবং তাদের দুই সন্তান।
মঙ্গলবার (৩১ মে) কলকাতার নজরুল মঞ্চে তার প্রথম গান-ই ছিল তার শেষ গান। মঞ্চের অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থতা অনুভব করছিলেন কে কে। কিন্তু থামাননি গান। হাসিমুখেই গান গেয়েছেন পুরো সময় ধরে। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ শরীর খারাপ হয়ে যায় তার। তারপরই হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় এই সঙ্গীত শিল্পীকে। সূত্র: জি নিউজ