ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হন, তবে তিনি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেবেন বলে সতর্ক করেছেন ট্রাম্পের শাসনামলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জন বোলটন। তিনি মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক ও লেখক জিম স্কিউটোর কাছে এ কথা বলেছেন।
‘দ্য রিটার্ন অফ গ্রেট পাওয়ারস’ নামে একটি বই লিখেছেন জিম স্কিউটো। বইটি আগামী মার্চের ১২ তারিখে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বইয়ে জিম স্কাউটো লিখেছেন, ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা জন বোলটন আমাকে বলেছেন, আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প যদি বাইডেনকে পরাজিত করে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন, তবে আমেরিকা ন্যাটো থেকে বেরিয়ে যাবে। তখন ন্যাটো সত্যিকার অর্থেই বিপদে পড়বে।
এ ছাড়া ট্রাম্পের শাসনামলে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্বপালনকারী অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন কেলি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে ট্রাম্পের উন্নাসিকতা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপক্ষীয় চুক্তিকেও প্রভাবিত করবে।
জন বোলটনের বইয়ে জন কেলিকে উদ্ধৃত করে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকার ন্যাটোতে থাকার কোনো যৌক্তিকতাই দেখেন না ট্রাম্প। এমনকি তিনি জাপানে ও দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনা থাকারও বিরোধী। ট্রাম্প মনে করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন সঠিক ব্যাক্তি এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও একজন সঠিক মানুষ। আমেরিকা যদি ন্যাটোর সঙ্গে না থাকত, তাহলে পুতিন যুদ্ধ বাঁধাতেন না বলেও মনে করেন ট্রাম্প।
বইটির লেখক জিম স্কাউটো বলেন, ‘এই বই লেখার আগে আমি মার্কিন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা প্রায় সবাই আমাকে বলেছেন, ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন আমেরিকাকে ন্যাটো থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রায় কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। তিনি যদি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন, তবে ন্যাটো থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কাজ চূড়ান্ত করে ফেলতে পারেন।’
ট্রাম্পের প্রচারণার মুখপাত্র জেসন মিলার বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলের চার বছর আমরা বেশ শান্তিতে ছিলাম। দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছিল। আর ওবামা ও বাইডেনের আমলে ইউরোপ মৃত্যু ও ধ্বংস দেখেছে।’
গত শনিবার দক্ষিণ ক্যারোলিনায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেন, ন্যাটোর জোটে থাকা যেসব সদস্য রাষ্ট্র ঠিকমতো বিল পরিশোধ করবে না, তাদের ওপর হামলা চালানোর জন্য রাশিয়াকে অনুপ্রাণিত করবেন তিনি।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে আমেরিকাজুড়ে। তাঁর বক্তব্যকে ‘আতঙ্কজনক ও বিকৃত মস্তিষ্কপ্রসূত’ বলে আখ্যা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্য ‘অত্যন্ত ভয়াবহ ও বিপজ্জনক’। আর ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যের ফলে আমেরিকা ও ইউরোপের সৈন্যরা ঝুঁকিতে পড়বেন।