নিজের হাতে ফুচকা বানিয়ে বাংলাদেশি পর্যটককে খাওয়ালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে সোমবার দার্জিলিং এ যান মমতা ব্যানার্জি।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকালে ‘গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন পাহাড়ি রাস্তায়। আর তখনই অন্য মুডে দেখা গেল মা-মাটি-মানুষের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে।
এদিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ করেই এরিচমন্ড হিল থেকে চিড়িয়াখানার দিকে যাচ্ছিলেন মমতা। সেখানেই তার চোখে পড়ে নারী সদস্য দ্বারা পরিচালিত “অঞ্জলি সেলফ হেল্প গ্রুপ” নামক একটি ফুচকা স্টল। সোজা ঢুকে পড়েন ওই ফুচকার স্টলে। সেখানেই নারী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন মমতা।
একসময় পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে পরিচয় দিয়ে বলে ওঠেন ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এখানে ঘুরতে এসেছি।’ এসময় ওই সেলফ গ্রুপের নারী সদস্যরা তাকে স্বাগত জানান।
এসময় মমতাকে বলতে শোনা যায় “উনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। উনি আমাদের অতিথি। ওনাকে ফুচকা দিন। আমি ফুচকার পয়সা দিয়ে দিচ্ছি।” এ সময় পাশে থাকা ছোট বাচ্চাসহ অন্যদেরও ফুচকা পরিবেশনের কথা বলেন মমতা।
এক সময় মমতা নিজেই ফুচকা বানাতে লেগে পড়েন। আর মমতার ফুচকা বানানো দেখে ওই স্টলটির চারপাশে ভিড় জমে। তার উপরে ছিল সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ছবি তোলার ব্যস্ততা।
এরপর একটি সাদা প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে ফুচকাটি ফুটো করেন তিনি। তার মধ্যে মশলা সহকারে আলু-ছোলা-মটরের পুর, তেতুল গোলা পানি ঢুকিয়ে কাগজের প্লেটে করে পাশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকসহ সকলকে পরিবেশন করেন। এরপর পাশে উপস্থিত থাকা অন্য রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকে ফুচকা বাবদ যা খরচ হয়েছে তা চেয়ে নেন মমতা।
তবে এবারই নয়, এর আগে গত মার্চ মাসেই দার্জিলিং সফরে এসে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নারীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী এবং সেসময় তাদের সাথে হাত লাগিয়ে মোমো তৈরি করতে দেখা যায় মমতাকে। পরে সেই মোমো সকলের মধ্যে পরিবেশন করেন তিনি। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সফরে গিয়ে কখনো রান্না করতে, কখনো চা তৈরি করতে দেখা গেছে মমতাকে।
এদিকে মঙ্গলবারই দার্জিলিংয়ের মল রোডে একটি কফি হাউজের উদ্বোধন করেন মমতা। যার পোশাকি নাম ক্যাফে হাউস। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মুখ্য সচিব এইচ.কে দ্বিবেদী, গায়ক ও অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়, কফি হাউজের কর্ণধার সত্যম রায় চৌধুরী প্রমুখ।
এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন সাহেব চট্টোপাধ্যায়, আর সাহেবের সাথেই গলা মেলান মুখ্যমন্ত্রীও।
বেসরকারি উদ্যোগে এই কফি হাউস তৈরি হলেও এর পরিকল্পনা মমতা ব্যানার্জির। মমতা বলেন বাংলা, ভারত কিংবা ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা’- মান্না দের বিখ্যাত সেই গানের ছোঁয়া পেতে গেলে এখানে একবার হলেও আসতেই হবে। পাহাড়ের সাথে নাম মিলিয়ে এর নাম রাখা হয়েছে ক্যাফে হাউস।’
এই কফি হাউজের অন্যতম আকর্ষণ চা বা কফি পান করতে করতেই কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।