বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে দ্বিতীয় রেলরুটের মাধ্যমে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্য মেঘালয়কে সংযুক্ত করার কথা ভাবছে ভারত। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রেলওয়ে বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের কাতিহার ডিভিশন।
এ প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৭০০০ কোটি রুপি। এর মধ্যে যমুনার ওপর নির্মাণ করা হবে ১০ কিলোমিটার একটি সেতু। এ প্রকল্প নিয়ে বুধবার দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে হিলি জিরো পয়েন্টে মিটিং হয়েছে। রেলওয়ের সূত্রকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে ভারতের অনলাইন টেলিগ্রাফ।
‘প্রপোজড রেল লিংক ফর ২ স্টেটস ভায়া বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক বছর ধরে মেঘালয়ের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর করিডোর (জেএমসিসি) এই রেলরুটের দাবি জানিয়ে আসছে। এর উদ্দেশ্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হিলি দক্ষিণ দিনাজপুরকে মেঘালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা। হিলি দক্ষিণ দিনাজপুর হলো মেঘালয়ের তুরা জেলা সংলগ্ন একটি সীমান্ত শহর।
জেএমসিসির প্রধান নবকুমার দাস বলেছেন, সর্বশেষ প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি জানেন। এই রেলরুট কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমানে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে তাতে কাউকে দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে শিলিগুড়ি হয়ে তুরা পৌঁছাতে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত রুট চালু হলে এই দূরত্ব নেমে আসবে ১২০ কিলোমিটারে।
তিনি আরও বলেন, দৃশ্যত কেন্দ্র আমাদের প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে মেনে নিয়েছে। ২০১৭ সালে প্রস্তাবিত এই রুটের উপযোগিতা যাচাই করে দেখেছে কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি কাতিহার বিভাগ রেলওয়ে বোর্ডের কাছে ওই প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই রেলরুট হিলি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। তারপর তা ঘোড়াঘাট, পলাশবাড়ি, গাইবান্ধা, যমুনার ওপর দিয়ে তুরার কাছে মহেন্দ্রগঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এই প্রকল্পকে বিদ্যুতায়িত করা হবে। রেলওয়ে বোর্ডের কাছে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তাতে বলা হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি রুপি। এর মধ্যে আছে যমুনার ওপর একটি ১০ কিলোমিটার ব্রিজ এবং হিলিতে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ।
প্রস্তাবিত এ প্রকল্প নিয়ে বুধবার হিলি জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জেএমসিসির কিছু কর্মকর্তা সাক্ষাত করেছেন। নবকুমার দাস বলেন, এ সময় আমরা তাদেরকে এ প্রকল্পের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উত্থাপন করার অনুরোধ করেছি, যাতে আমরা আগামী মাসে তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারি। যেহেতু প্রকল্পটি বাংলাদেশের ভূমির ভেতর দিয়ে অতিক্রম করবে, তাই এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় সব সহায়তা করবে- এ বিষয়ে আমরা তাকে অনুরোধ জানাতে চাই।