ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্র বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। সোমবার মধ্যরাতের দিকে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাত সোয়া ১২টায় আবওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্র বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। এখন এটি সামনের দিকে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ভোলার পাশ দিয়ে রাত ৯টার দিকে সিত্রাংয়ের কেন্দ্র উপকূলে প্রবেশ করে। এর অগ্রভাগ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপকূলে আঘাত করে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল ও কক্সবাজারসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া জানান, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যায় উপকূলে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৯ ফুট (৩ মিটার) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সময় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.নি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত (পুন:) ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ
সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেইসাথে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কি.মি. বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত (পুন:) ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেইসাথে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
দেশের অন্যান্য জেলায় ভারীবর্ষণসহ ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঢাকা, মাদারিপুর, গোপালগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, কিশেরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলার নদী বন্দর মূহকে ০৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত (পুন:) ০৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ক্ষয়ক্ষতিতে যোগাযোগ করবেন যেখানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা ও তদারকির জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ ও দফতরের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সংকটকালীন যেকোনো প্রয়োজনে নিচের নম্বর সমূহে যোগাযোগ করুন। ১. বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি): 017-926-23467, 8900575 ২. বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি): কেন্দ্রীয় অভিযোগ কেন্দ্র: 01708149502-3, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ: 01819228616, 02-223354646 ৩. ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো): কেন্দ্রীয় অভিযোগ কেন্দ্র: 02-8900501, 01713090586, 01324435981. ৪. ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি: (ডিপিডিসি): কন্ট্রোল রুম নাম্বার: 02223364800; 02223363000, 01321137195 ৫. নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লি: (নেসকো): রাজশাহী জোন +8801755582300, রংপুর জোন +8801715041240