বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও ঢাকায় বায়ু দূষণ রোধে ব্যর্থতার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেন, যদি আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে রাজধানীর বাতাসের মান গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর পর্যায়ে কেন? যখন বাসার বাইরে যাই তখন ধুলাবালি ও বায়ু দূষণে আমাদের চোখ জ্বালা করে কেন?
আজ একটি রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আইনজীবীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
হাইকোর্ট ঢাকা ও আশপাশের পাঁচ জেলা-গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের সব অবৈধ ইটভাটা অবিলম্বে বন্ধ করে তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে বায়ু দূষণ নিয়ে আগের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত বলেন, বায়ু দূষণ কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ছিটানো হচ্ছে না। এখনো মশার উপদ্রব থাকার কথা উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনকে অবশ্যই এ দিকে নজর দিতে হবে। যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং মেয়াদোত্তীর্ণ পুরোনো গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) দায়ের করা একই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, হাইকোর্ট ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সকে তাদের গাড়ি দিয়ে গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ ও টঙ্গীসহ রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে জরুরী ভিত্তিতে পানি ছিটানোর উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন।
এ ব্যাপারে হাইকোর্ট বলেছিলেন, ফায়ার সার্ভিস তাদের প্রধান দায়িত্ব আগুন নেভানোর কাজের সঙ্গে আপস না করে রাস্তায় পানি ছিটানোর কাজটি করবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনগুলোকে রাস্তায় ছিটানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দেন আদালত।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে, হাইকোর্ট রাজধানী এবং এর আশেপাশের এলাকায় বায়ু দূষণ কমাতে সরকারকে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ঢাকা ও আশেপাশের পাঁচ জেলা–গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর এবং মানিকগঞ্জে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করিম স্বপ্না এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জোবায়ের হোসেন সজীব।