বরিশালে বিএনপির সমাবেশের দুইদিন আগে ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর ও ডিসি ঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ও স্পিডবোট ভোলার উদ্দেশ্যে যাত্রীদের নিয়ে ছেড়ে যায়নি এবং ভোলা থেকেও কোনো নৌযান বরিশালে আসেনি।
অলিখিতভাবে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হলেও স্পিডবোট বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি। আগামী শনিবার (৫ নভেম্বর) পর্যন্ত স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে কী কারণে লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।
বরিশালের লঞ্চ ও স্পিডবোট মালিক সমিতি লঞ্চ বন্ধের কোনো কারণ না জানাতে পারলেও বিএনপি নেতারা বলছেন, ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করেই নৌযানগুলো বন্ধ করা হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরিশাল-ভোলা রুটে যাতায়াতকারী নিয়মিত যাত্রীরা।
লঞ্চ চলাচল বন্ধের বিষয়ে মালিক সমিতি কিছু না জানালেও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন জানান, ভোলায় আওলাদ নামক একটি লঞ্চে গতকাল হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদে সকাল থেকে শুধু ভোলা রুটে লঞ্চ চলছে না। তবে মেহেন্দিগঞ্জ ও মজুচৌধুরীরহাট রুটের লঞ্চগুলো এখনও চলাচল করছে।
বরিশাল স্পিডবোট ঘাটের লাইন ইনচার্জ মো. লিটন ও তারেক শাহ বলেন, বরিশাল থেকে বোট চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। ভোলা থেকে বোট বন্ধ করা হয়েছে, তাই এ রুটে বোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বোট বন্ধের কোনো কারণ আমাদেরও জানায়নি ভোলার লোকজন। তবে সদর উপজেলার তালতলী থেকে মেহেন্দিগঞ্জ রুটের স্পিডবোট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলসিক জাহান শিরিন বলেন, কোনো কিছুতেই বরিশালের গণসমাবেশে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না। প্রয়োজনে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ পায়ে হেটে, সাইকেলে, ট্রলার ও নৌকায় চেপে আসবেন।
রোববার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাস মালিক-শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর সব ধরনের তিন চাকার যানের ধর্মঘটের ডাক দেয় বরিশাল জেলা মিশুক, বেবিট্যাক্সি, টেক্সিকার ও সিএনজি চালক শ্রমিক ইউনিয়ন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যান ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বন্ধের দাবিতে ৪-৫ নভেম্বর বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বাস মালিকদের সংগঠন বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ।
আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতেই চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের মতো সরকারি দলের ইন্ধনে এই অপকৌশল নেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে গণসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।
গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের সমাবেশটি নির্বিঘ্নে হলেও ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুরে গণসমাবেশের আগেও সেখানকার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা বাস ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে বাস বন্ধ থাকায় গণসমাবেশমুখী নেতাকর্মীদের পাশাপাশি চাকরিজীবী, চাকরিপ্রার্থী এবং সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।