এশিয়ার পর ভয়াবহ বন্যার স্বাক্ষী আফ্রিকা। পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় বন্যার কবলে অর্ধেকের বেশি অঞ্চল। ভারত মহাসাগরে ইন্ডিয়ান নিনো তৈরি হওয়ায় বন্যায় বিপর্যস্ত এই অঞ্চল।
দুর্যোগে কেনিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে ৭০ জনের মরদেহ ও ৩শ’র বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে রেডক্রসের কর্মীরা। বাস্তুচ্যুত ১ লাখ ২০ হাজার বাসিন্দা। আর বেঁচে ফেরাদের পরিস্থিতি খুবই করুণ। শিগগিরই বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা না থাকায় পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা আবহাওয়া বিভাগের। প্রতিবেশি তানজিনিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে ১৫৫ জন। বন্যায় প্লাবিত বুরুন্ডি, উগান্ডা ও সোমালিয়া।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমার মা, দুই ভাই আর ভাগ্নেকে বন্যায় হারিয়েছি। এখানে আশ্রয় নিতে আসা এক প্রতিবেশিও বন্যায় মারা গেছেন।’
আরেকজন বলেন, ‘পানি বেশি থাকায় গতকাল এখানে আসতে পারিনি। এখন পানি কিছুটা কমেছে। ধারণা করছি, আরও মরদেহ ভেসে আসবে।’
বন্যার্তদের জন্য প্রাথমিকভাবে আড়াইকোটি ডলার বরাদ্দের ঘোষণা কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের। প্রাণহানি ঠেকাতে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের জোর করে নিরাপদে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে শিগগিরই বৃষ্টি কমার আভাস না থাকায়, পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কার আবহাওয়া দপ্তরের।
প্রতিবেশি তানজিনিয়ার অবস্থা আরও ভয়াবহ। বন্যার পাশাপাশি ভূমিধসে বাড়ছে প্রাণহানি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানান, বন্যা ও ভূমিধ্বসে সর্বস্ব হারিয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় অঞ্চল দার এস সালাম। এদিকে বন্যার কারণে বুরুন্ডিতে বাস্তুচ্যুত প্রায় ১ লাখ বাসিন্দা। যদিও প্রাণহানি সংখ্যা অনেকটাই কম।
চারদশকের খরা শেষে গেল বছর পূর্ব আফ্রিকায় বন্যায় প্রাণ হারান ৩শ’র বেশি মানুষ। জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের এল-নিনোর মতো ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ইন্ডিয়ান নিনো। তাই আগামী কয়েকবছর মহাসাগর সংলগ্ন দেশগুলোয় দেখা যেতে পারে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ।