ভারতের উত্তর প্রদেশের সাম্ভলে প্রাচীন মসজিদ শাহী জামা মসজিদ নিয়ে সংঘর্ষে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
মসজিদটি নিয়ে স্থানীয় একটি আদালতের আদেশে সরকারি সংস্থা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) একটি দল তদন্ত করতে গেলে স্থানীয় মুসলিমরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই রাস্তায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চিরাগ গোয়েলের দাবি, নিহত ছয়জনই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চলা গুলির ক্রসফায়ারে পড়েন। তিনি বলেন, পুলিশ কেবল টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। নিহতরা ঘরোয়া বন্দুকের গুলিতে মারা গেছেন।
সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় একটি হিন্দু পুরোহিতের দায়ের করা মামলার পর। মামলায় অভিযোগ করা হয়, মসজিদটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের জায়গার ওপর তৈরি। আদালত প্রথম দফা তদন্তের আদেশ দেয় ১৯ নভেম্বর। চার দিন পর দ্বিতীয় দফার তদন্তের সময় ভিডিও এবং ফটোগ্রাফি করা হলে তা আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
শাহী জামে মসজিদটি ১৫২৬ সালে মুঘল সম্রাট বাবরের শাসনামলে তৈরি হয় বলে ঐতিহাসিকদের দাবি।
রোববার সংঘর্ষ শুরু হলে প্রথমে দুজনের মৃত্যু হয়। পরে আরও চারজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে, মুঘল আমলে বেশ কয়েকটি মসজিদ হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল। সাম্ভলের এই ঘটনা সেই ধারাবাহিকতায় হয়েছে।
এর আগে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় ১৯৯২ সালে দেশজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়, যেখানে প্রায় ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়, অধিকাংশই মুসলিম।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে হিন্দু আধিপত্য জোরালো হয়েছে। এতে দেশটির প্রায় ২১ কোটির মুসলিম জনগোষ্ঠী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষ ভারতের ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য একটি বড় হুমকি তৈরি করছে। সূত্র- ডন