সালমান রুশদির লেখা ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি বিদেশ থেকে ভারতে আমদানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, ৩৬ বছর পর দিল্লি হাইকোর্ট তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ওই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে শুনানি ছিল বিচারপতি রেখা পল্লি ও বিচারপতি সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, গত শতকের আটের দশকের শেষদিকে সালমান রুশদির ওই বইটি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সে সময় এ নিয়ে নির্দেশ জারি করেছিল রাজীব গান্ধী সরকার। ২০১৯ সালে এই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সন্দীপন খান নামের এক ব্যক্তি।
ওই মামলারই শুনানিতে আদালত জানায়, অনেক খুঁজেও শুল্ক আইন, ১৯৬২ অনুযায়ী জারি করা এই নিষেধাজ্ঞার কোনো নথি খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস’। অন্য কোনো সংশ্লিষ্ট সংস্থাও এর খোঁজ দিতে পারেনি।
এই পরিস্থিতিতে ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই নেই যে, এই ধরনের কোনো নথির অস্তিত্ব ছিল না। আর তার ফলে আমরা এর বৈধতাও পরীক্ষা করতে পারছি না।
মামলার বাদী সন্দীপন খান আদালতে জানিয়েছিলেন, যেহেতু ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর ওপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তাই তিনি বিদেশ থেকে বইটি আনতে পারছেন না। বাদীকে বইটি দেশে আনার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে বইটির ওপর আরোপিত দীর্ঘ ৩৬ বছরের নিষেধাজ্ঞা উঠল।
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসটি সাহিত্যিক রুশদির পঞ্চম উপন্যাস। প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। শুরু থেকেই বইটি ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইরানের সু্প্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ খোমেনি জারি করেন রুশদির মৃত্যু-ফতোয়া। এর পর প্রায় একদশক অন্তরালেই ছিলেন সাহিত্যিক।
পরাবাস্তববাদী উত্তরাধুনিক এই বইটি তীব্র ক্ষোভের তৈরি করে মুসলিমদের অনেকের মধ্যে। তারা মনে করেন, বইটিতে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে। ভারতই প্রথম এই বইটি নিষিদ্ধ করেছিল। পরে পাকিস্তানসহ অন্য বেশ কিছু মুসলিম দেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও একই পদক্ষেপ নেয়।