বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বর্তমান সরকারের কৃষকবান্ধব নীতির কারনে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। ধান, মাছ, মাংস ও সবজি উৎপাদনে কৃষকের সক্ষমতা বেড়েছে। এখন নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে কাজ চলছে।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (কারস) মিলনায়তনে ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং এন্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা) আয়োজিত “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় প্রত্যাশা ও অর্জন” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
ভোক্তা’র সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখরের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, মার্কেটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এডিটর ইন চিফ, গ্লোবাল টেলিভিশন।
এতে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ভোক্তার পরিচালক মহসীনুল করিম লেবু। আলোচনায় অংশ নেন ড. লতিফুল বারী, প্রধান বিজ্ঞানী, উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমএস সিদ্দিকী, উপদেষ্টা, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন ল্যাব প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. জগৎ চাঁদ মালাকার ও সাংবাদিক গবেষক মাজেদুল হক।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষকের মাঠ থেকে ভোক্তার টেবিল সবখানেই খাবার নিরাপদ হতে হবে। এই চেইনের যে কোন পর্যায়ে খাবার অনিরাপদ হতে পারে, তাই ভোক্তাকে সচেতন হতে হবে। ভোক্তার সচেতনতা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের একটি শক্ত মানদন্ড।
ড. মীজানুর রহমান বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে আমাদের দেশের মতো বাজার মনিটরিং নেই। মনিটরিং হতে হবে কত মজুদ আছে, সরবরাহ ঠিক মতো হচ্ছে কিনা?
এ সময় তিনি পাঠ্যক্রমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানান।
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বাজারে চাহিদা ও যোগানের কোন সংকট নেই। অনেক সময় তথ্যের ঘাটতির কারনে সংকট তৈরি হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন এবং সংস্থা গঠন এবং সরকারের নানামূখী তৎপরতার উল্লেখ করে মূল নিবন্ধে বলা হয়, এতসব তৎপরতার পরও দেশে এখনো নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এতে নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে ভোক্তার পক্ষ থেকে নয় দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভোক্তাদের স্বীকৃত অধিকার সুরক্ষায় প্রচলিত আইনের কার্যকর প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে সংশোধনী এনে যুগোপযোগী করা, ভোক্তা স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের জন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী শাস্তি নিশ্চিত করা, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন, আইনের আওতায় যথাযথ প্রতিকার পেতে ভোক্তাদের সঠিক তথ্য এবং সহযোগিতা প্রদান, ভোক্তা স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফোরাম ও কমিটিতে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, শিক্ষা পাঠ্যক্রমে ভোক্তা শিক্ষার বিষয় অন্তর্ভূক্তি, ডিজিটাল আর্থিক সেবা বা ই-কমার্স খাতে প্রতারনা রোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন এবং প্রতারনামুলক বিজ্ঞাপন সম্প্রচার রোধে সুষ্ঠু বিজ্ঞাপন নীতিমালা প্রণয়ন ও কর্তৃপক্ষ গঠন।